সাত খুনের মামলার রায়ে ২৬ জনের মৃত্যুদন্ড

    0
    572

    নারায়ণগঞ্জ, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৭, নোঙরনিউজ ডটকম: নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের মামলায় র‌্যাব-১১ এর সাবেক সিও লে. কর্নেল (বরখাস্তকৃত) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, মেজর (বরখাস্তকৃত) আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (বরখাস্তকৃত) এম এম রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া রায়ে আরো আট আসামীকে ১০ বছরের ও এক আসামীকে সাত বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ১০ টা ১০ ডিমনিটে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- র‌্যাব-১১ এর সাবেক সিও লে. কর্নেল (বরখাস্তকৃত) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর (বরখাস্তকৃত) আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (বরখাস্তকৃত) এম এম রানা, সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, মিজানুর রহমান দীপু, মোখলেসুর রহমান, মহিউদ্দিন মুন্সি, ল্যান্স নায়েক হিরা মিয়া, সিপাহী আবু তৈয়ব, সেলিম, সানাউল্লাহ, শাহজাহান, জালাল উদ্দিন, আসাদুজ্জামান নূর, পূর্নেন্দু বালা, আর ও জি আরিফ হোসেন, আল আমিন, তাজুল ইসলাম, এনামুল, বেলাল হোসেন, শিহাব উদ্দিন, মূর্তজা জামান চার্চিল, আলি মোহাম্মদ, আবুল বাশার, রহম আলী, এমদাদুল হক। এদের মধ্যে সেলিম, শাহ জাহান ও সানাউল্লাহ সানা পলাতক রয়েছে। দশ বছরের কারাদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রুহুল আমিন, নুরুজ্জামান, এস আই আবুল কালাম আজাদ, কনস্টেবল বাবুল, এএসআই কামাল, কনস্টেবল হাবিব, এএসআই বজলুর রহমান ও আলিম। এছাড়া আসামী নাসিরকে সাত বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়। এই মামলায় মোট ৩৫ জন আসামীর মধ্যে বারোজন পলাতক রয়েছে।

    এরআগে কারাগারে থাকা ২৩ জনকে আজ সকালে হাজির করা হয়েছে। এই ২৩ জনের সবাইকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত। মামলার রায় ঘোষণার পর একটি মামলার বাদি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, রায়ে তিনি সন্তুষ্ট। তিনি এ রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন। সাত খুনের ঘটনায় আরেক মামলার বাদি নিহত এডভোকেট চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। এডভোকেট চন্দন সরকারের মেঝ মেয়ে ডা. সুস্মিতা সরকারও এই রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি। এজন্য প্রধানমন্ত্রী, পুলিশ, সাংবাদিকদেরসহ সকলের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবী সাবেক পিপি এডভোকেট সুলতানুজ্জামান বলেন, এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারিনি। তারা এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে উল্লেখ করেন। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি নূর হোসেনের আইনজীবী খোকন সাহা বলেন, আমি মনে করি আমার আসামী মামলায় ন্যায্য বিচার পায়নি। আমরা উচ্চ আদালতে এ ব্যাপারে আপিল করবো। মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবী এডভাকেট সাখাওয়াৎ হোসেন খান বলেন, সাত খুনের নৃশংস ঘটনার পর বিচারের দাবিতে আমরাসহ সারাদেশের আইনজীবী ও সাধারণ মানুষ আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। আমরা আইনী লড়াই করেছি। সেসব আন্দোলন ও আইনী লড়াইয়ের শেষে আজ এই রায়ে আমি সন্তুষ্ট। রায় যাতে দ্রুত কার্যকর করা হয় সে দাবি জানাচ্ছি। সকাল নয়টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে থাকা ১৮জন আসামীকে কোর্ট হাজতে আনা হয়। সকাল নয়টা চল্লিশ মিনিটে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে লে. কর্নেল (বরখাস্তকৃত) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, মেজর (বরখাস্তকৃত) আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (বরখাস্তকৃত) এম এম রানাসহ পাঁচ আসামীকে আদালতে আনা হয়। রায় ঘোষণার পর বেশ কয়েকজন আসামী কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তবে নূর হোসেন, তার সহযোগী চার্চিল, র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা নির্বিকার ছিলেন। রায় ঘোষণা উপলক্ষে আদালত, আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। এসময় প্রায় পাঁচশ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়।

    একটি উত্তর ত্যাগ

    আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
    এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে