রেলওয়ের বিশাল দীঘি ইজারা দিচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ

0
4
চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ ডেবা নামে পরিচিত রেলওয়ের বিশাল দীঘিটি ইজারা দেওয়ার জন্য উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। আগে থেকেই এ দীঘির মালিকানা নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিরোধ চলছে। ১৯৬০ সালে রেলওয়ে থেকে চট্টগ্রাম বন্দর পৃথক হয়ে যাওয়ার পর থেকেই দীঘিটি রেলওয়ের দখলে রয়েছে। রেলওয়ে প্রতি বছর ইজারা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মাছ চাষের জন্য বরাদ্দ দিয়ে আসছে। কিন্তু এ বছর বন্দর কর্তৃপক্ষ বরাদ্দের বিজ্ঞপ্তি দিল নতুন করে সংকট সৃষ্টি হয়।
চট্টগ্রামের একটি আঞ্চলিক পত্রিকায় গত ১ অক্টোবর এই উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরের ডেপুটি ম্যানেজার এস্টেট মুহাম্মদ শিহাব উদ্দিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোসাইলডাঙ্গা মৌজার আরএস দাগ নং ১৭৫৩ ও ৫১২০, বিএস খতিয়ান-১৬/১, বিএস দাগ নং-২৪৩২ ও ৪৫১৬, শ্রেণি ডেবা, মোট জমি ১৬ দশমিক ৮৪ একর (কমবেশি) জলীয় অংশ (আগ্রাবাদ ডোবা) তিন বছর মেয়াদি অস্থায়ী লাইসেন্স প্রদানের নিমিত্তে দরপত্র আহ্বান করা যাচ্ছে। আগামী ১২ নভেম্বর দুপুর ২টার মধ্যে দরপত্র জমা দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, গত বছর ২৯ মে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে উভয় সংস্থার প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সভায় সিদ্ধান্ত হয়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নামে ভুলক্রমে রেকর্ড হয়ে যাওয়া ১৮ দশমিক ৯২ একর ভূমি রেকর্ড সংশোধনের জন্য মামলা করবে রেলওয়ে। আর মামলায় চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিরোধপূর্ণ স্থানে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে উভয়পক্ষকে নির্দেশনা দেয় মন্ত্রণালয়।
এদিকে আগ্রাবাদ ডেবাটি গত বছর থেকে তিন বছরের জন্য বরাদ্দ পেয়ে মাছ চাষ করছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটন। গত ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের পর তিনি পলাতক থাকলেও মাছ চাষে তদারকি করা মোহাম্মদ রুবেল বলেন, ‘বর্তমানে ডেবাতে আমাদের প্রায় ৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। এ ছাড়া এখানে অনেক টাকার মাছও রয়েছে। এ অবস্থায় বন্দরের পক্ষ থেকে বরাদ্দ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ায় আমাদের ব্যবসায়িক লোকসান হতে পারে।’
দীঘিরপাড়ে ১৭৮টি কোয়ার্টার রয়েছে উল্লেখ করে রেলওয়ে কর্মচারী ও সমাজকল্যাণ পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ জীবন বলেন, ‘এই ১৭৪টি কোয়ার্টারের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ৩০টি। কিন্তু এখন তা পুরোপুরি বন্দরের বলা হলে আমরা কোথায় যাব। দীর্ঘদিন ধরেই তা রেলের আওতাধীন।’
১৯০৮ সালে গোসাইলডাঙ্গা মৌজার জমি রেলওয়ের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়। চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে বন্দর পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের সময় প্রয়োজন হয় লাখ লাখ টন মাটি। তৎকালীন আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ে এ মাটি সংগ্রহের জন্য এখানে খনন করে। তাতে বিশাল এক জলাশয় তৈরি হয়। এ জলাশয় থেকে পানি সরবরাহ করা হতো জাহাজে, রেল ইঞ্জিনে এবং আবাসিক এলাকায়। সূত্র: দেশ রূপান্তর

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে