প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ১, ২০২৪, ৬:৩২ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৪, ১১:৫৯ অপরাহ্ন
পাট ও বস্ত্র এবং জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বিনিয়োগে বিশ্বব্যাংকের প্রতি পাট উপদেষ্টার আহবান
পাট ও বস্ত্র এবং জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বিনিয়োগের জন্য বিশ্বব্যাংকের প্রতি আহবান জানিয়েছেন নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি আজ বুধবার সকালে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠককালে এ আহ্বান জানান।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভুটানে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেকের নেতৃত্বে বিশ্বব্যাংকের ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করে।
এ সময়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব সঞ্জয় কুমার বণিকসহ মন্ত্রণালয় এবং দপ্তর ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, পাট বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সোনালি আশঁ পাট একটা সময় ছিল বাংলাদেশের বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনের প্রধান খাত। বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে এ ধারায় কিছুটা ছেদ পড়লেও সম্প্রতি জলবায়ু পরিবর্তনে বিশ্বব্যাপী পরিবেশ বিপর্যয় রোধে পাট ও পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি বলেন, পলিথিন ও প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে পরিবেশ বান্ধব সোনালী ব্যাগ ও জুট জিও টেক্সটাইল বহুমুখী পাটপণ্যসহ নানা ধরনের পণ্য উদ্ভাবনে দেশে-বিদেশে পাটের ব্যাপক চাহিদার সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে উৎপাদিত পাটের ৭০ ভাগ বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে।
উপদেষ্টা বলেন, আমাদের ২৫টি সরকারি পাটকল ও ২৫টি বস্ত্রকল উৎপাদন কার্যক্রম কয়েকবছর আগে থেকেই বন্ধ হয়ে আছে। বর্তমানে মিলগুলোতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সহায়তায় বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের শিল্প কারখানাগুলো কৌশলগতভাবে যোগাযোগের জন্য অত্যন্ত সুবিধাজনক স্থানে অবস্থিত। সে কারণে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা অত্যন্ত সহজে এখানে বিনিয়োগ করতে পারে।
বাংলাদেশের বস্ত্র ও পোশাক শিল্প ক্রমশ উন্নতি করছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, এক সময় বাংলাদেশের মসলিন কাপড় জগৎ বিখ্যাত ছিলো। সরকার মসলিনের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার জন্য ইতোমধ্যে একটি প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করেছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে মসলিন কাপড় তৈরীর সুতা তৈরীর প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। শীঘ্রই বাণিজ্যিক উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এ সময় উপদেষ্টা দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে বহুমুখী পাট পণ্য ও বস্ত্র পণ্য উৎপাদনের আরো বেশি বিনিয়োগ ও গবেষণার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
বৈঠকে নৌ পরিবহন উপদেষ্টা জানান, জাহাজ নির্মাণ বাংলাদেশের একটি সম্ভাবনাময় এবং ক্রমবিকাশমান শিল্প। স্থানীয়ভাবে তৈরি জাহাজ রপ্তানি করার মাধ্যমেই মুলতঃ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাহাজ নির্মাণ একটি প্রধান প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পে পরিণত হয়েছে।
আবদৌলায়ে সেক বলেন, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগী। বিশ্বব্যাংক দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের জনগণের জন্য কাজ করছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে বিশ্বব্যাংক অঙ্গীকারাবদ্ধ।
তিনি জানান, পাট, বস্ত্র, শিপিংসহ সকল সেক্টরেই নতুন নতুন প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক আগামীতে বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে আগ্রহী।
বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় পরিচালিত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয় এবং পাট উপদেষ্টা চলমান প্রকল্প সমূহকে যথাসময়ে সমাপ্ত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করেন।