জলতাত্ত্বিক ও রাজনৈতিক উভয় দিক থেকেই এ আন্ত:সীমান্ত নদীগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে যেমন নদীগুলি প্রচুর পরিমাণে পলি বহন করে এনে মোহনা এলাকায় নতুন নতুন ভূমি গঠন করছে, আবার এ পলির অংশবিশেষ নদীর তলদেশকে ভরাট করে তুলছে যা বন্যা সংঘটনের জন্য অনেকাংশে দায়ী। এ নদীগুলির উজান অঞ্চলের রাষ্ট্র দু'টির সাথে অনেক সময়ই নদীর পানি বণ্টনে আন্তর্জাতিক রীতি প্রয়োগ না হওয়ায় দুর্যোগ ও রাজনৈতিক সমস্যার ঘনঘটা হয়।
বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে ৫৫টি আন্ত:সীমান্ত নদী রয়েছে যার মধ্যে কেবল গঙ্গা নদীর পানি বণ্টনের চুক্তি হয়েছে দু'দেশের মাঝে। উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালে দু’টি দেশের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষাকারী ‘যৌথ নদী কমিশন’ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর মূল কাজ হলো, যৌথ নদীগুলোর প্রবাহ সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে কিভাবে দু’টি দেশই সর্বাধিক সুযোগ-সুবিধা নিতে পারে সে ব্যপারে দুটি দেশের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করা। ভারতের সাথে তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তির খসড়া হয়েছে, কিন্তু তা আলোর মুখ দেখেনি।
গঙ্গা চুক্তি নবায়ন ও তিস্তা চুক্তি প্রয়োজন :
দেশের একমাত্র আন্ত:সীমান্ত পানিবন্টন চুক্তি 'বাংলাদেশ-ভারত গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি' স্বাক্ষরিত হয় ১৯৯৬ সনের ১২ ডিসেম্বর। প্রতিবছর ৩১ জানুয়ারি হতে ৩১ মে এই সময়ে ফারাক্কায় প্রবাহিত পানির পরিমাপের ভিত্তিতে দু’টি দেশের মধ্যে পানিবণ্টন হবে বলে নির্ধারণ করা হয়। পূর্ববর্তী ৪০ বছরের গড় মাত্রা অনুযায়ী ভারত গঙ্গার পানির ভাগ পেতে থাকে। তবে সংকটের সময় বাংলাদেশকে ৩৫,০০০ কিউসেক পানি সরবরাহ করার গ্যারান্টি রয়েছে। ৩০ বছর মেয়াদী এ চুক্তি ২০২৬ সালে দু’টি দেশের সম্মতির প্রেক্ষিতে নবায়নের কথা।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলায় গঙ্গা নদীর ওপর ১৯৬১ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত নির্মিত হয় সোয়া দুই কিলো মিটার লম্বা ফারাক্কা বাঁধ। বাঁধ থেকে ভাগীরথী-হুগলি নদী পর্যন্ত ফিডার খালটির দৈর্ঘ্য ৪০ কিমি।
তৎকালীন বিভিন্ন সমীক্ষায় বিশেষজ্ঞরা অভিমত প্রকাশ করেন যে গঙ্গা-পদ্মার মত বিশাল নদীর গতি বাঁধ দিয়ে বিঘ্নিত করলে নদীর উজান এবং ভাটি উভয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য মারাত্মকভাবে নষ্ট হতে পারে। এ ধরনের নেতিবাচক অভিমত সত্ত্বেও ফারাক্কায় গঙ্গার ওপর বাঁধ নির্মাণ ও হুগলী-ভাগরথীতে সংযোগ দেয়ার জন্য ফিডার খালখননের কাজও শুরু হয় । পরবর্তীতে যা মূলত বাংলাদেশ এবং পাশাপাশি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার রাজ্যে ব্যাপক পরিবেশ বিপর্যয় ডেকে আনে ।
পাশাপাশি দেশের উত্তরাঞ্চলে পরিবেশ, কৃষি ও অর্থনীতির জন্য তিস্তা পানিবন্টন চুক্তির প্রয়োজন ক্রমশই বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে রংপুর বিভাগের মধ্য দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করা সিকিমে উৎপন্ন নদী তিস্তা বাংলাদেশের চতুর্থ বৃহত্তম নদী। তিস্তার প্লাবনভূমি ২ হাজার ৭৫০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তীর্ণ। লাখ লাখ মানুষ কৃষি, খাদ্য উৎপাদন, মাছ ধরা এবং গৃহস্থালি দৈনন্দিন পানির চাহিদা ও জীবিকা নির্বাহের জন্য তিস্তা নদীর ওপর নির্ভর করে।
তিস্তা নদী বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ফসল বোরো ধান চাষের জন্য পানির প্রাথমিক উৎস এবং মোট ফসলি জমির প্রায় ১৪ শতাংশ সেচ প্রদান করে। তিস্তা ব্যারাজ প্রজেক্ট বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সেচ প্রকল্প। এটাও তিস্তার পানির ওপর নির্ভরশীল। এই প্রকল্পটির অন্তর্ভুক্ত উত্তরবঙ্গের ছয়টি জেলা যথা নীলফামারী, রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া, গাইবান্ধা ও জয়পুরহাট এবং এর ‘কমান্ড এরিয়া’(আওতাভুক্ত এলাকা) ৭ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর বিস্তৃত। তিস্তার সঙ্গে বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের মানুষের জীবন–জীবিকা ও অর্থনীতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
তিস্তা নদীতে ভারতের উজানে পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিমে বাঁধ, ব্যারাজ, জলবিদ্যুৎসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশে তিস্তা নদীর পানির প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। এই অবকাঠামোগুলো তিস্তার উজানে পানির চাহিদা পূরণ করছে। কিন্তু তা ভাটিতে বাংলাদেশ অংশে তিস্তা নদীতে পানির প্রাপ্যতা দারুণভাবে হ্রাস করেছে।
ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় দেখা যায়, তিস্তার পানির ঘাটতির কারণে প্রতিবছর প্রায় ১৫ লাখ টন বোরো ধান উৎপাদনের ক্ষতি হয়েছে। এটা দেশের মোট ধান উৎপাদনের প্রায় ৯ শতাংশের সমান। গবেষণায় আরও ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে, তিস্তায় পানির ঘাটতির কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের চাল উৎপাদন প্রায় ৮ শতাংশ এবং ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় ১৪ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে।
তিস্তা অববাহিকায় পানির ঘাটতির কারণে কৃষকেরা ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করে জমিতে সেচ দিচ্ছে। এতে করে কৃষকদের সেচের খরচ অনেক গুণ বেড়ে গেছে এবং কৃষিব্যবস্থাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে যে উত্তরবঙ্গের খাল-বিল, পুকুর, জলাশয় শুকিয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এর সঙ্গে শুষ্ক মৌসুমে তিস্তায় পানি না থাকার সম্পর্ক রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা চলতে থাকলে তা ভবিষ্যতে পুড়ো উত্তরবঙ্গের পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে।
তিস্তার পানিবন্টন চুক্তি স্বাক্ষর নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিন আলাপ-আলোচনার পর স্বাক্ষরের জন্য চুক্তির একটি খসড়া চূড়ান্ত করা হয়। এই চুক্তি অনুযায়ী শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার পানির ৩৭ দশমিক ৫ ভাগ বাংলাদেশের এবং ৪২ দশমিক ৫ ভাগ ভারতের পাওয়ার কথা ছিল। বাকি ২০ ভাগ থাকবে নদীর পরিবেশ রক্ষার উদ্দেশ্যে। ২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় তিস্তার পানি নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষরের কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়নি।
এরপর নরেন্দ্র মোদির সরকার তিস্তার পানি চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বাংলাদেশে তাঁর প্রথম সফরের সময় মোদি বলেছিলেন, পানির সমস্যা একটি মানবিক সমস্যা। তিনি আত্মবিশ্বাসী যে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের সহায়তায় তাঁরা খুব শিগগিরই তিস্তা ও ফেনী নদীর বিষয়ে একটি ন্যায্য সমাধানে পৌঁছাতে পারবেন। তবুও এক দশকের বেশি সময় ধরে বিষয়টি অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
সাম্প্রতিক বন্যা:
গত মাস আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহের মাঝামাঝি অকস্মাৎ ভয়াবহ বন্যায় ভেসে যায় বাংলাদেশের ১২টি জেলা। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, কক্সবাজার, সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের অন্তত ৫০ লাখ মানুষ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী এ বন্যায় ১৯ শিশুসহ ৭১ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সরকার, সাধারণ মানুষ ও ছাত্রসমাজের সম্মিলিত উদ্যোগে ব্যাপক ত্রাণ তৎপরতা চলছে।
ভারত ও বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত এলাকায় বন্যার জন্য অনেকে ত্রিপুরার গোমতী নদীর ডুম্বুর বাঁধ খোলাকে দায়ী করলেও তা সঠিক নয় বলে জানায় সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ২২ আগস্ট ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলে-
"ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদীর ক্যাচমেন্ট এলাকায় গত কয়েক দিন ধরে এই বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাংলাদেশে বন্যা মূলত বাঁধের নিচের দিকের এই বৃহৎ ক্যাচমেন্টের পানির কারণে। ডুম্বুর বাঁধটি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত থেকে বেশ দূরে অবস্থিত। বাংলাদেশ থেকে এটি ১২০ কিলোমিটার দূরে উজানে অবস্থিত। এটি একটি কম উচ্চতার (প্রায় ৩০ মিটার) বাঁধ যা বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে। এখান থেকে বাংলাদেশও ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পায়।"
বিজ্ঞপ্তিতে ভারত আরো জানায়, "বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী সমগ্র ত্রিপুরা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে গত ২১ আগস্ট থেকে ভারি বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। ভারি প্রবাহের ক্ষেত্রে বাঁধগুলোতে স্বয়ংক্রিয় রিলিজ পরিলক্ষিত হয়েছে। অমরপুর স্টেশন একটি দ্বিপাক্ষিক প্রটোকলের অংশ যার অধীনে আমরা বাংলাদেশে বাস্তব সময়ের বন্যার তথ্য প্রেরণ করছি।"
বাংলাদেশের অধিকার, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগ:
এর পরপরই ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বন্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি উচ্চতর কমিটি গঠন করার প্রস্তাব করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এতে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে দুই দেশ যৌথভাবে মোকাবিলা করতে পারবে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ব্রিফিংয়ে জানান, ‘ড. ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে আমরা যে ধরনের ফ্ল্যাগ মিটিং করি, উচ্চ পর্যায়ের এমন একটি কমিটি করা গেলে এটি ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে মিটিং করবে এবং উভয় দেশ যৌথভাবে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ করবে।’
অতি সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অভ ইন্ডিয়া-পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাতকারেও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আন্ত:সীমান্ত নদী নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের পানি বণ্টনের বিষয়টি অবশ্যই আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী হতে হবে। বাংলাদেশের মতো ভাটির দেশগুলোর হিস্যা সমুন্নত রাখার সুনির্দিষ্ট অধিকার রয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তির বিষয়ে মতপার্থক্য দূর করার উপায় নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করবে অন্তর্বর্তী সরকার। বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে, এতে কোনো দেশেরই লাভ হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে বসে থাকার ফলে এটা কোনো কাজে আসছে না। আমি যদি জানি, কতটুকু পানি পাব, তাহলে ভালো হতো। এমনকি পানির পরিমাণ নিয়ে যদি আমি খুশি নাও হই, তাতেও সমস্যা নেই। বিষয়টির সমাধান হতেই হবে।' জনগণেরও একই আশা- সমাধান আসবেই।
শান্তিপূর্ণ আন্ত:সীমান্ত নদী ব্যবস্থাপনা:
এশিয়ার প্রতিবেশি ইউরোপ মহাদেশের নিবিড় সীমান্তের দেশগুলো তাদের আন্ত:সীমান্ত নদীর ন্যায্য পানিবন্টন নিশ্চিত করেছে। নিজেরা করেছে, প্রয়োজনে জাতিসংঘের ইউরোপভিত্তিক সংস্থা ইউএনইসিই'র সহায়তা নিয়েছে। এর ফলে বিশ্বের কাছে এটি স্পষ্ট যে, আন্ত:সীমান্ত নদী অববাহিকায় বসবাসরত জাতিগোষ্ঠী সবাই উন্নত হলে রীতি-বিধির পাশাপাশি সকল পক্ষের অধিকারের প্রতি সম্মানবোধই ন্যায্য পানিবন্টনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে। গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনার এই অববাহিকায় প্রতিবেশিবৃন্দসহ আমরাও চাই এই ক্ষেত্রে বিশ্বে উন্নত জাতি হিসেবে স্বাক্ষর রাখতে।
নোঙরের কথা:
২০০৪ সাল থেকে নদী ও পরিবেশ সংরক্ষণের দাবিতে আন্দোলনরত সংগঠন 'নোঙর' মনে করে দেশের মানুষ তাদের অধিকার সম্পর্কে যত সচেতন হবে ততই তারা জাতিগতভাবে উন্নতির পথে এগিয়ে যাবে। দেশের নদ-নদী ও নদীপথে মানুষের প্রাণ রক্ষায় মানুষকে সচেতন করতে ২০০৪ সালের ২৩ মে মেঘনায় স্মরণকালের ভয়াবহ লঞ্চডুবিসহ গত ৫২ বছরে প্রায় ২০,০০০ নিহত মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা জানিয়ে দিবসটিকে জাতীয় নদী দিবস হিসেবে ঘোষণার জন্য আমরা দুই দশক ধরে দাবি জানিয়ে আসছি। নদীমাতৃক দেশে নিশ্চয়ই একদিন জাতীয় নদী দিবস ঘোষিত হবে।
সেইসাথে, আন্ত:সীমান্ত নদীর সুষম পানিবন্টনও আমাদের ন্যায্য দাবি। উজানের দেশ বাঁধ-ব্যারাজ দিয়ে একতরফা পানি প্রত্যাহার করার সুযোগ আন্তর্জাতিক সমাজও মেনে নেবে না। এ জন্য সারাদেশকে জাগিয়ে তুলতে হবে, এগিয়ে আসতে হবে বোদ্ধা-গবেষক-কর্মী-সংগঠকদেরসহ প্রতিটি মানুষকে। আসুন, আরেকবার। দেশের জন্য নিয়ে আসি নদীজলের অধিকার।
সংযুক্ত: যৌথ নদী কমিশন, বাংলাদেশ প্রণীত ৫৭টি আন্ত:সীমান্ত নদীর তালিকা।
রায়মঙ্গল, ইছামতী-কালিন্দী, বেতনা-কোদালিয়া, ভৈরব-কপোতাক্ষ, মাথাভাঙ্গা, গঙ্গা, পাগলা, আত্রাই, পুনর্ভবা, তেতুলিয়া, টাঙ্গন, কুলিক বা কোকিল, নাগর, মহানন্দা, ডাহুক, করতোয়া, তালমা, ঘোড়ামারা, দিওনাই-যমুনেশ্বরী, বুড়িতিস্তা, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র, জিঞ্জিরাম, চিল্লাখালি, ভোগাই, সোমেশ্বরী, দামালিয়া/যালুখালী, নওয়াগাং, উমিয়াম, যাদুকাটা, ধলা, য়াইন, শারি-গোয়াইন, সুরমা, কুশিয়ারা, সোনাই-বারদল, জুরি, মনু, ধলাই, লংলা, খোয়াই, সুতাং, সোনাই, হাওড়া, বিজনী, সালদা, গোমতী, কাকরাই-ডাকাতিয়া, সিলোনিয়া, মুহুরী, ফেনী, কর্ণফুলি, নিতাই, শঙ্খ, মাতামুহুরী, নাফ।
স্বত্বাধিকারী নোঙর নিউজ | ও সম্পাদক - সুমন শামস
Developed by KetNey Pvt .Ltd. and UnivaHost