ঢাকার ৪৫ কাঠার ঐতিহ্যবাহী পুষ্প সাহা পুকুর ডাকাতি চলছে: নোঙর

0
58

পুরান ঢাকার লালবাগের জগন্নাথ সাহা রোডের ঐতিহ্যবাহী পুষ্প সাহা পুকুরটি এখন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দখলে !

আজ থেকে ১১২ বছর আগে প্রাসাদটি নির্মাণ করেছিলেন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী জগন্নাথ সাহা। বাড়ির সামনে খনন করেন দুই ‘ঘাটলার’ বিশাল পুকুর। পুকুর হলে কী হবে ঘাটে বাঁধা থাকত নৌকা। জমিদার বাবু নৌকায় বসে মাছ ধরতেন। প্রাসাদটি ধ্বংসাবশেষ হয়ে কোনোমতে দাঁড়িয়ে আছে।
গত বৃহস্পিতিবার নোঙর এর সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেল, ৪৫ কাঠার বিশাল পুকুরটির ১৪ আনাই ভরাট করা হয়ে গেছে।

প্রায় ৬০ বছর স্থানীয় ‘আজাদ মুসলিম ক্লাব’ পুকুরটি ঢাকা জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে বছর বছর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করে আসছিল। ২০০৫ সাল থেকে পুকুরটি ভরাট শুরু হয়। পুকুরের পূর্ব-উত্তর পাড়ে ১২ কক্ষের একটি টিনের ঘর নির্মাণ করেছেন ইকরামুল্লাহ সরওয়ার্দী। ২০০৯ সালে ওই অংশে নাজিম উদ্দিনের নামে নির্মাণ করা হয় দুটি পাঁচতলা আবাসিক ভবন। পাশাপাশি পুকুরটির পশ্চিম পাড়ে চারটি ও পূর্ব পাড়ে দুটি টিনের ঘর বানিয়ে ভাড়া দিয়েছেন নাজিম উদ্দিন। ২০১০ সালে আদালত পুকুরটি ভরাট না করার নির্দেশ দিয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন। কিন্তু ওই আদেশ উপেক্ষিত হয়েছে এবং এখনও ভরাট চলছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পুকুরের দক্ষিণ-পূর্বপাড়ে একতলা বাড়ি তোলা হয়েছে। তার ছাদে জমির মালিকানা দাবি করে সাইনবোর্ডও লাগানো হয়েছে। উত্তর-পূর্বপাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে কারখানা। এর মালিক ইকরামুল্লাহ সরওয়ার্দী। কারখানার শ্রমিকরা জানান, ইকরামুল্লাহ সরওয়ার্দীর কাছ থেকে ভাড়া নেওয়া হয়েছে কারখানাটি। পুকুরের প্রবেশপথে মালিকানা সূত্রের সাইনর্বোড এবং ভেতরে নির্মাণ করা হয়েছে রিকশা গ্যারেজ।

গত তত্ত্বাবধায়ক সরকার পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল। কিন্তু মহাজোট সরকার ক্ষমতাসীন হলে জনৈক ব্যক্তি ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ এনে পুকুরটি দখলের চেষ্টা চালায়। স্থানীয় লোকজন চ্যালেঞ্জ করায় তারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এরপর পুকুরটি অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে ছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় ওই এলাকার একজন এখন পুকুরের মালিক সেজে তা দখলের নিয়েছে।

৫ সেপ্টেম্বর নদী ও প্রাণ প্রকৃতি সামাজিক সংগঠন নোঙর বাংলাদেশ অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ ও পুকুর রক্ষার দাবি জানিয়ে পুকুরটি চারদিক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নোঙর বাংলাদেশ এর সভাপতি সুমন শামস, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবদুর রহিম, ফজলে সানি, এফ এইচ সবুজ, নাসির খান মিন্টু, মোহাম্মদ সেলিম, মোহাম্মদ বাবলুসহ স্থানীয় আরো অনেকে।

এ সময় বক্তারা বলেন, পুকুরটি রক্ষায় কর্তৃপক্ষের নীরবতাও রহস্যজনক! ঐতিহ্যবাহী এ পুকুরটি রক্ষায় বৈশম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা, অন্তবর্তীকালীন সরকারসহ পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর এগিয়ে আসা জরুরী।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে