আখাউড়ায় অবাদে সরকারি খালের মাটি বিক্রি

0
16

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় সরকারি খালের মাটি বিক্রি করে দিচ্ছে একটি প্রভাবশালী মহল। উপজেলার ধরখার ইউনিয়নে নুরপুর গ্রামে ২ কিলোমিটার একটি খালের খননকৃত মাটি বিক্রি করছে ওই মহলটি। এসব মাটি দিয়ে পুকুর এবং তিন ফসলি জমি ভরাট চলছে। এভাবে ওই চক্রটি একদিকে ফসলি জমির ক্ষতি করছে অপর দিকে সরকারি মাটি বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।

মোঃ রাসেল আহমেদ, নোঙর-ব্রাক্ষণবাড়িয়া প্রতিনিধি: মাটি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা অনুযায়ী খালের মাটি খাল পাড়ে রাখার নিয়ম থাকলেও মানছে না খনন কারী প্রতিষ্ঠান। এতে খালের পাড় ভেঙ্গে পড়া এবং ফসলি জমি খালে পতিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঠিকাদারের সাথে যোগসাজস করে ধরখার ইউনিয়নের ধরখার গ্রামের জসিম মিয়া ও মুসা মিয়া, রুটি গ্রামের রাসেল মিয়া এবং ভাটামাথা গ্রামের নুরুল ইসলাম এসব মাটি বিক্রি করছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে। এদের সাথে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কয়েকজন নেতাও জড়িত রয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা প্রশাসন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অর্ধশত লোকের স্বাক্ষরযুক্ত একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ধরখার ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদা নয়ন। তবে খনন কাজের ঠিকাদার মোস্তাফিজুর রহমান দাবী করেছেন তিনি মাটি বিক্রি করছেন না। জায়গা না থাকায় কিছু মাটি বাইরে জমি এবং পুকুরে ফেলছেন। এতে যদি খুশি হয়ে কেউ খননকারীদেরকে টাকা দেয় সেটা তিনি জানেন না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধরখার ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামের কবরস্থান থেকে পশ্চিমে তিতাস নদী পর্যন্ত ২.২ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি খাল খনন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

প্রকল্পের চুক্তিমূল্য ১ কোটি ২৮ লাখ ৬৯ হাজার। খননের কাজ পেয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইউনুছ এন্ড ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড। ৬ এপ্রিল কাজের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে খনন শেষে করার খালটি প্রায় ১৫ মিটার চউড়া এবং ৩/৪ মিটার গভীর খনন কাজ চলছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক মোস্তাফিজুর রহমান ধরখার ইউনিয়নের জসিম মিয়া, মুসা মিয়া, রাসেল মিয়া এবং নুরুল ইসলামকে দিয়ে খালের খনন কাজ করাচ্ছেন। কিন্তু ঠিকাদারের লোকজন খালের খননকৃত মাটি খালের পাড়ে না রেখে বিক্রি করে দিচ্ছে। এসব মাটি দিয়ে তিন ফসলি জমি এবং পুকুর ভরাট করছে স্থানীয়রা।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভেকু এবং ড্রেজার মেশিন দিয়ে খাল খনন কাজ চলছে। কয়েকটি ট্রাক্টর খননকৃত এসব মাটি নিয়ে যাচ্ছে। ভেকু চালক আক্তার ইসলাম বলেন, খাল খননের জন্য জসিম মিয়া আমার কোম্পানী থেকে ভেকু এনেছে। আমি খনন করছি। মাটি কোথায় নিচ্ছে আমি জানি না। স্থানীয় বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম বলেন, জসিম, মুসাসহ আরও কয়েজন লোক দিনে-রাতে ট্রাক্টর দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার খালের মাটি বিক্রি করে দিচ্ছে। ধরখার ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদা নয়ন বলেন, খালের পাড় দিয়ে জমিতে যাওয়ার একটি মাটির রাস্তা আছে। রাস্তাটি ভালো না। আমরা ঠিকাদারকে বলেছিলাম খালের মাটি দিয়ে রাস্তা মেরামত করে দেওয়ার জন্য। এতে করে জমিতে যাওয়া আসা এবং ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে আসতে কৃষকদের সুবিধা হবে। খালের পাড়ও মজবুত হবে। কিন্তু স্থানীয় একটি চক্র ঠিকাদারের সাথে আঁতাত করে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে লক্ষ লক্ষ টাকার মাটি বিক্রি করে দিচ্ছে। এসব মাটি দিয়ে পুকুর, তিন ফসলি জমি ভরাট করা হচ্ছে। ধরখার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আক্তার হোসেন মাটি বিক্রির সাথে জড়িত নয়। খাল থেকে ২/৩ শ ট্রাক মাটি গ্রামের কবরস্থানে ফেলেছি।

এজন্য যদি ফাঁসি হয় হবে। এ ব্যপারে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ড, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মনজুর রহমান বলেন, মাটি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা অনুযায়ী খালের মাটি বিক্রি করার কোন সুযোগ নাই। মাটি খাস জমি উন্নয়নে ব্যবহার হবে। খালের মাটি খালের পাড়ে রাখা হবে। মাটির পরিমান বেশি হলে সরকারি মাটি নিলাম কমিটির মাধ্যমে মাটি নিলামে বিক্রি করা হবে। আপনার মাধ্যমে খালের মাটি বিক্রি করার কথা জানলাম। আমি ঠিকাদারকে তলব মাটি অব্যবস্থাপনার বিষয়ে জানতে চাইব।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে