ব্রাজিলকে হারিয়ে সেমি-ফাইনালে ক্রোয়েশিয়া

0
9
টাইব্রেকে ক্রোয়েশিয়ার হয়ে ভ্লাসিচ, মায়ের, মডরিচ ও অরসিচ কেউই গোল মিস করেননি। ব্রাজিলের নেয়া কিকের মধ্যে রদ্রিগোর শট ঠেকিয়ে দেন ক্রোয়েশিয়ার কিপার লিভাকোভিচ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শটে গোল করেন কাসেমিরো ও পেদ্রো। তবে, নির্ধারনী চতুর্থ শটটি মিস করেন অভিজ্ঞ মারকিনিয়োস।

ফিফা বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে গেছে ব্রাজিল। সেলেকাওদের টাইব্রেকে ৪-২ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে ক্রোয়েশিয়া। ১২০ মিনিট শেষে স্কোরলাইন ১-১ গোলের সমতায় থাকলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।

বিশ্বকাপের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে নির্ধারিত সময়ে গোলের দেখা পায়নি ক্রোয়েশিয়া ও ব্রাজিলের কেউই। অতিরিক্ত সময়ে খেলা গড়ালে ১০৫ মিনিটে নেইমারের গোলে ব্রাজিল এগিয়ে গেলেও ১১৭ মিনিটে ব্রুনো পেতকোভিচের গোলে সমতায় ফেরে ক্রোয়েশিয়া।

আর টাইব্রেকে ৪-২ গোলের ব্যাবধানে ব্রাজিলকে কাঁদিয়ে শেষ পর্যন্ত সেমি ফাইনাল নিশ্চিত করে ক্রোয়েশিয়া। আর এ হারে ২০০২ সালের পর থেকে বিশ্বকাপে ইউরোপের কোনো দেশের বিপক্ষে জয় অধরা থাকল ব্রাজিলের।

টাইব্রেকে ক্রোয়েশিয়ার হয়ে ভ্লাসিচ, মায়ের, মডরিচ ও অরসিচ কেউই গোল মিস করেননি। ব্রাজিলের নেয়া কিকের মধ্যে রদ্রিগোর শট ঠেকিয়ে দেন ক্রোয়েশিয়ার কিপার ডমিনিক লিভাকোভিচ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শটে গোল করেন কাসেমিরো ও পেদ্রো। তবে, নির্ধারনী চতুর্থ শটটি মিস করেন অভিজ্ঞ মারকিনিয়োস।

এতে করে বিশ্বকাপে ৪টি পেনাল্টি শুটআউটের চারটিই জিতল ক্রোয়েশিয়া। বিশ্বকাপে পেনাল্টি শুট আউটে তাদের রেকর্ডই এখন শতভাগ। ৫টি টাইব্রেকের ৪টি জিতে দুইয়ে আছে আর্জেন্টিনা।

লিভাকোভিচ একাই প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ভিনিসিয়াস-রিচার্লিসন-রাফিনিয়াদের সামনে। পুরো ম্যাচে ২১টি শট নিয়েছে ব্রাজিল গোলে। যার মধ্যে টার্গেটে ছিল ১১টি। ১টি থেকে ম্যাচের ১০৩ মিনিটে গোল করেন নেইমার। বাকি ১০টি শট ঠেকিয়ে দেন লিভাকোভিচ।

এবারের বিশ্বকাপে এক ম্যাচে এর চেয়ে বেশি সেভ করেননি আর কোনো কিপার।

কাতারের এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে শুক্রবার সন্ধ্যায় ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই ভিনিসিয়াস জুনিয়রের সুযোগ ছিল গোল পাওয়ার। তবে দুর্বল শট হওয়ায় সহজেই গ্লাভস বন্দি করেন লিভাকোভিচ।

প্রথম ১০ মিনিট ব্রাজিল চাপে রাখলেও ১২তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে যায় ক্রোয়েশিয়া। ডিফেন্ডার ইয়োসিপ ইউরানোভিচ ডি-বক্সের ভেতরে বল পাঠালে তা পায়ে লাগাতে পারেননি ক্রোয়েশিয়ার কোনো খেলোয়াড়।

ম্যাচের ২৩তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে দারুণ শট নেন কাসেমিরো। প্রতিপক্ষের গায়ে লেগে কর্নার হলেও সেখান থেকে সুবিধা নিতে পারেনি ব্রাজিল। এর দুই মিনিট পর ইউরানোভিচকে ফাউল করার কারণে হলুদ কার্ড পান ব্রাজিলের ডিফেন্ডার দানিলো।

ক্রোয়েশিয়া ফ্রি কিক পেলে শট নেন লুকা মডরিচ। তবে থিয়াগো সিলভা তার তা রুখে দেন। ২৮তম মিনিটে মাঝমাঠ থেকে ব্রাজিল ফ্রি কিক পায়। তবে গোল হয়নি। এর তিন মিনিট পর নেইমারকে ফাউল করার কারণে মার্সেলো ব্রোজোভিচকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি।

এর পর বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও দুই দলের কেউই গোলের দেখা পায়নি। শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য থেকেই বিরিতিতে যায় দুই দল।

দ্বিতীয়র্ধের শুরুটা দারুণ করে ব্রাজিল। বক্সের ভেতর দারুণ জায়গায় বল পেয়েও গোল করতে পারেননি ভিনিসিয়াস জুনিয়র।

৪৭তম মিনিটে রাফিনিয়া বল বাড়ালে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে বল পোস্টে গেলেও তা দারুণভাবে ঠেকিয়ে দেন ডমিনিক লিভাকোভিচ। এর মিনিট খানেক পর নেইমারের নেয়া শট আটকে দেয় ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্ডাররা।

৫৫তম মিনিটে রিচার্লিসনের কাছ থেকে বল পেয়ে শট করেন নেইমার। তবে এবারও অসাধারণ সেভে দলকে রক্ষা করেন লিভাকোভিচ। পরের মিনিটেই কোচ তিতে রাফিনিয়ার বদলে মাঠে নামান ফরোয়ার্ড অ্যান্টোনিকে।

৬২তম মিনিটে দারুণ এক আক্রমণে যায় ক্রোয়েশিয়া। তবে শেষ পর্যন্ত গোলের দেখা পায়নি দলটি। নির্ধারিত সময়ে একের পর আক্রমণ ঠেকিয়েছেন লিভাকোভিচ।

৮৪তম মিনিটে তিতে রিচার্লিসনের বদলি নামান পেড্রোকে। ম্যাচের ৮৬ মিনিটে কর্নার পায় ব্রাজিল। তবে তা থেকে কাজে লাগাতে পারেনি তারা। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে