জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবে্লায় বিশ্ব নেতাদের আরো বেশি দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে

0
35
‘জলবায়ু সম্মেলন, নগর দারিদ্র্য ও সংকট’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপ ছবি : নোঙর নিউজ

জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় নগরের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য কম মূল্যে আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে তহবিলের দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।

তারা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে স্থানচ্যুত হয়ে নগরে আসা দরিদ্র মানুষদের তালিকা তৈরি করা জরুরি। তাদের সামগ্রিক ক্ষয়-ক্ষতির হিসাব সরকারি প্রতিবেদনে নথিবদ্ধ করে ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে।

বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘জলবায়ু সম্মেলন, নগর দারিদ্র্য ও সংকট’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপে তারা এসব কথা বলেন।

বস্তিবাসী অধিকার সুরক্ষা কমিটির সভাপতি হোসনে আরা বেগম রাফেজার সভাপতিত্বে ও বারসিক পরিচালক পাভেল পার্থের সঞ্চালনায় সংলাপে বক্তৃতা করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো. আব্দুস সোবহান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. নীলোপল অদ্রি, বাপার যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, নোঙর বাংলাদেশ এর সভাপতি সুমন শামস, রাশেদ হাওলাদারসহ আরো অনেকে।

সংলাপে প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান বলেন, ‘বাংলাদেশ তথা সারা বিশ্বে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে। অথচ জলবায়ু সম্মেলনের নামে যে পরিমাণ টাকা খরচ হচ্ছে তার ফলাফল কিছুই আসছে না। বারবার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বললেও বাস্তবে ধনী দেশগুলো তা করছে না। ’

এবারের সম্মেলন থেকে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত  হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

অধ্যাপক ড. নীলোপল অদ্রি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মানুষ গ্রাম থেকে শহরে আসছে। শহরে এসেও তারা জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাবের শিকার হচ্ছে। আগামীতে আরো মানুষ গ্রাম থেকে শহরে আসবে। এটা মোকাবেলায় নিকটবর্তী শহর ও নগরগুলোতে তাদের থাকা ও কাজের ব্যবস্থা করতে হবে। ’

নোঙর বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুমন শামস জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সর্বোচ্চ ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় থাকা বাংলাদেশ কে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘রাজনৈতিক ভাবে বিশ্ব পরিবেশ বিপর্যয় মোকাবেলা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিশ্ব নেতাদের একযোগে এগিয়ে আশার অঙ্গীকার এবং বাস্তবায়ন করতে হবে। সেইসাথে দেশের প্রাকৃতিক ভার্সাম্য বজায় রাখতে হলে বাংলাদেশের নদ-নদী ও প্রাণ প্রকৃতি সংরক্ষণে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের একযোগে এগিয়ে আসতে হবে।

রাজশাহীর বরেন্দ্র এলাকার বস্তিবাসী মো. শাহ আলম বলেন, ‘পানির সমস্যার কারণে আমরা কৃষিকাজ করতে না পেরে গ্রাম ছেড়ে নগরের আসতে বাধ্য হয়েছি। বরেন্দ্র এলাকায় আগে ৬০ ফুট মাটির নিচে গেলে পানি পাওয়া গেলেও এখন ১৫০ থেকে ২০০ মাটির নিচে ডিপ-টিউবওয়েল বসানোর পরও পানি পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে পেশা পরিবর্তন করে হকারি, রিকশা চালনাসহ নানা ধরনের কাজ করে নগরে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে। ’

বরেন্দ্র এলাকার পরিবেশ ফিরে পাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলনে উপস্থিত ধনী দেশের প্রতিনিধিদের কাছে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তিনি।

ডিয়াকোনিয়া প্রতিনিধি খোদেজা সুলতানা লোপা বলেন, ‘জলবায়ু সংকটের কারণে নারী-পুরুষের বৈষম্য বাড়ছে। নারীদের ওপর কাজের চাপ অনেক বেশি বেড়ে যাচ্ছে। এই অবস্থার জন্য দায়ী না হয়েও দরিদ্র দেশের মানুষদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ’

জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী দেশগুলোকে আরো বেশি দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানান তিনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে