


বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সড়ক, রেল, নৌ ও আকাশপথে আমদানি-রপ্তানি হয়ে থাকে। এতদিন সড়ক পথেই দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বেশিরভাগ হতো। সম্প্রতি ভারত থেকে রেলপথে আমদানি-রপ্তানি বেড়েছে। বিশেষ করে বেনাপোল, দর্শনা ও রোহানপুর বন্দর দিয়ে রেলপথে পণ্য আসছে বেশি।
করোনা অতিমারির পর থেকে এই তিন বন্দর দিয়ে কনটেইনার ট্রেন সার্ভিস জনপ্রিয় হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত রেলপথে আমদানিই হচ্ছে বেশি। রপ্তানি হয় নামমাত্র।
দেশের শুল্ক স্টেশনগুলোর কার্যক্রম নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দর্শনা, রোহানপুর ও বেনাপোল বন্দর দিয়ে রেলপথে পণ্য আমদানি বেড়েছে। দর্শনা ও রোহানপুর বন্দরের আমদানির সিংহভাগ হচ্ছে রেলপথে। আর বেনাপোল বন্দরেও রেলপথে আমদানি বেড়েছে। রেলপথে আমদানি বৃদ্ধির কারণ প্রসঙ্গে ব্যবসায়ী ও শুল্ক স্টেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, এই ব্যবস্থায় সীমান্তে পণ্য লোড-আনলোডের জটিলতা নেই। সময় ও খরচ কম লাগে। দেশের মধ্যে রেল সংযোগ রয়েছে যেসব জায়গায়, সেখানকার ব্যবসায়ীরা রেলপথে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে দর্শনা দিয়ে তিন হাজার ১৪৮ কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয়েছে। আর ২০১৯-২০ অর্থবছরে হয় ১৫৮ কোটি টাকার। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল ৬৪৮ কোটি টাকার পণ্য। আমদানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পাথর (স্টোন চিপস, বোল্ডার চিপস), চাল, ভুট্টা ইত্যাদি। দর্শনা দিয়ে শুধু আমদানি হয়। অপর পাশে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নদিয়া জেলার গেদে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোহানপুর বন্দর দিয়ে রেলপথে পণ্য আমদানি সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এই বন্দর দিয়ে গত এক বছর ধরে ট্রেনে আমদানি শুরু হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে রোহানপুর বন্দর দিয়ে ১৭ হাজার ৮২২ কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয়েছে। এর আগে ২০১৯-২০ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই বন্দর দিয়ে ১৬৭ ও ৯৯ কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয়। এই বন্দর দিয়ে পাথর, গম, ভুট্টা, চালসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি হয়।
দেশের প্রধান স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়েও রেলপথে পণ্য আমদানি বেড়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি হয়েছে চার হাজার ৯২৫ কোটি টাকার পণ্য। আর একই সময়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে আমদানি হয়েছে ২৩ হাজার ৫৯১ কোটি টাকার পণ্য। ২০১৯-২০ অর্থবছরে রপ্তানির পরিমাণ ছিল চার হাজার ৮৯৮ কোটি টাকা এবং আমদানি ১৭ হাজার ১৪০ কোটি টাকার। বেনাপোল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রধানত তুলার বর্জ্য, পাট, পাটজাত পণ্য, তৈরি পোশাক, মাছ ইত্যাদি রপ্তানি হয়। আর ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রধানত মোটরগাড়ি ও তার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, বিভিন্ন ধরনের মেশিনারিজ, কাপড়, রাসায়নিক, তুলা, চাল, ফল, শিশু খাদ্য ইত্যাদি আমদানি হয়ে থাকে।