সেন্টমার্টিনে সীমিত হচ্ছে পর্যটক যাতায়াত

0
17

দেশের একমাত্র প্রবালসমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্টমার্টিন সরকার ঘোষিত একটি প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা। অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন এবং পর্যটকদের অসচেতনতা, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা, পরিবেশ ও প্রতিবেশবিরোধী আচরণের কারণে সেন্টমার্টিনের বিরল প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য দিন দিন হুমকির মুখে পড়ছে। যার কারণে এবার সরকার কঠিন কিছু নিয়ম করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সরকার যেসব সিদ্ধান্ত নতুন করে নিতে যাচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে, দ্বীপটিতে একসঙ্গে ৮০০ এর বেশি পর্যটকের অবস্থান নিষিদ্ধ এবং অবস্থানকালীন সময় হবে স্বল্পকালীন যা পূর্ব থেকে নিধার্ণ করা থাকবে, সেন্টমার্টিনে প্রবেশ করার পূর্বে কতৃর্পক্ষের অনুমতির নেওয়ার বিধান এবং সেখানে রাত্রী যাপন পুরোপুরি বন্ধ করা। এসব বিধান রেখে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন (সংশোধিত ২০১০) আবারও সংশোধন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

পরিবেশ ও জলবায়ূ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধতন কর্মকর্তা আইন সংশোধনের উদ্যোগের কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি এ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটিতে বিবেচনার জন্য রয়েছে। কমিটির মতামত পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যদিও টুরিস্ট সংগঠনের পক্ষ থেকে এর বিরোধীতা করা হচ্ছে। তাদের মতে পর্যটন এলাকা ঘিরে অনেক ধরনের জীবিকা নির্বাহের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

এমন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে বিপুল জনগোষ্ঠী বেকার হয়ে পড়বে। সংসদীয় কমিটির সদস্য শাহীন চাকলাদার এমপি বলেন, ‘যেকোনো মূল্যে সেন্টমর্ন্টিনের পরিবেশ রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কমিটি দ্রুত সভা করে সিদ্ধান্ত নেবে। ইতিমধ্যে এক দফা সভায় সেখানে রাত্রীযাপন নিষিদ্ধকরাসহ বেশ কিছু কঠোর শর্ত আরোপ করে আইন সংশোধনের পক্ষে সুপারিশ এসেছে। এটি আগামী সভায় চূড়ান্ত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয় আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।’

জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ১৯৯৯ সালে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে সরকার পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা এসিএ ঘোষণা করেছিলো। কিন্তু সেখানে এখনো প্রতিদিন প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার পর্যটক ভিড় করছে। প্রায় ৮ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে থাকা এই দ্বীপটির স্থায়ী বাসিন্দা প্রায় ৯ হাজার। এছাড়া পর্যটক মিলে প্রতিদিন দ্বিগুণ সংখ্যক মানুষের চাপ পড়ে। পরিবেশ অধিদপ্তর ১৯৯৯ সালে সেন্টমার্টিন ভ্রমণের ক্ষেত্রে ১৪টি বিধিনিষেধ জারি করলেও সেসব নিষেধাজ্ঞা মানছে না পর্যটকরা। যেসব নিষেধাজ্ঞা ছিল সেগুলো হচ্ছে, দ্বীপের সৈকত, সমুদ্র বা নাফ নদীতে প্লাস্টিক বর্জ্য না ফেলা। দ্বীপের সৈকতে মোটরসাইকেলের মত যান্ত্রিক বাহন থেকে শুরু করে সাইকেল, ভ্যান, রিকশার মতো অযান্ত্রিক বাহন চালানো বন্ধ। এছাড়া দ্বীপের চারপাশে নৌভ্রমণ, জোয়ার ভাটা এলাকায় পাথরের ওপর হাঁটা, সামুদ্রিক কাছিমের ডিম পাড়ার স্থানে চলাফেরা, সৈকতে রাতে আলো জ্বালানো এবং ফ্লাশ ব্যবহার করে ছবি তোলা প্রভৃতি নিষিদ্ধ করা হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে