৭ বছরেও সন্ধান মেলেনি ডুবে যাওয়া পিনাক-৬ লঞ্চটির

0
8
পিনাক-৬ লঞ্চ ডুবি। এক ভয়াবহ ট্রাজেডির নাম। ভয়াবহ লঞ্চ ডুবিতে সরকারি হিসেবে ৪৯ জন যাত্রীর লাশ উদ্ধার ও ৫৩ জন নিখোঁজ হলেও ৭ বছরেও বিচার সম্পূর্ণ হয়নি। দোষীদের বিচার না হওয়ায় নিহত ও নিখোঁজদের স্বজনদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ। নিখোঁজ অর্ধ শতাধিক পরিবারের কাউকেই দেয়া হয়নি কোন অনুদান। আর অজ্ঞাত হিসাবে ২১ জনের লাশ দাফন হলেও মেলেনি পরিচয়। আজও সন্ধান মেলেনি লঞ্চটির।

২০১৪ সালে ঈদুল ফিতরের পর ৪ আগস্ট ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে শিবচরের কাওরাকান্দি ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া পিনাক-৬ লঞ্চটি পদ্মার উত্তাল ঢেউয়ের কবলে পড়ে মাওয়ার অংশে ডুবে যায়। সরকারি ভাবে ওই ঘটনায় ৪৯ জন যাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়। নিখোঁজ থাকে ৫৩ জন।

পিনাক-৬ লঞ্চ ডুবির ছয় বছর, আজও মুছেনি স্বজন হারানোর বেদনাএ দুর্ঘটনার পরপরই মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থানা ও মেরিন কোর্টে ২ টি মামলা হয়। আসামিরা গ্রেফতার হলেও বর্তমানে আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন। তবে ৭ বছর অতিবাহিত হলেও দোষীদের বিচার না হওয়ায় নিহত ও নিখোঁজদের স্বজনদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ রয়েছে।

এ দুর্ঘটনায় উদ্ধারকৃত ৪৯ টি লাশের মধ্যে ২৮টি লাশ পরিবারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয় আর ২১ জনকে শিবচর পৌরকবর স্থানে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। রেখে দেয়া হয় ওই ২১ জনের ডিএনএ টেস্টের নমুনা। তবে এই ৭ বছরেও কেউ সনাক্ত করতে আসেনি লাশগুলোর। মাটির নিচে গলে পচে নিঃশেষ হয়ে আছে পরিচয়টুকুও। সরকারি হিসেবেই নিখোঁজ থাকে আরও ৫৩ জন। তবে বেসরকারি হিসেবে অন্তত শতাধিক যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে। নিহতদের মধ্যে অনেকেই সপরিবারে ও নিখোঁজদের অনেকেই সপরিবারে রয়েছে।

দুর্ঘটনায় নিহত হিরা ও স্বর্নার বাবা ওই লঞ্চের যাত্রী নূরুল ইসলাম মিয়া বলেন, লঞ্চের মালিকসহ ঘাট সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে লঞ্চটি ডুবে যায়। আমার মেয়েসহ অনেক যাত্রী নিহত ও নিখোঁজ হয়। এ ঘটনার ৭ বছরেও দোষীদের কোন বিচার হলো না। গ্রেফতার হলেও তারা জামিনে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সরকার যদি দ্রুত দোষীদের বিচার সম্পন্ন না করে তাহলে এমন দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে। আমরা এ ঘটনার দ্রুত বিচার চাই।

বিআইডব্লিউটিএর কাঁঠালবাড়ি ঘাট পরিদর্শক আক্তার হোসেন বলেন, পিনাক-৬ লঞ্চ ডুবির পর এ নৌরুটে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। আগে একজন পরিবহন পরিদর্শক তিনটি ঘাটের দায়িত্ব পালন করতো। পিনাক দুর্ঘটনার পরে প্রতিটি ঘাটে একজন করে কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়াসহ অনেক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, পিনাক ৬ লঞ্চ দুর্ঘটনার পর থেকে এ নৌরুটে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নজরদারী রাখা হচ্ছে। কোনভাবেই লঞ্চে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে দেওয়া হচ্ছে না। কেউ আইন অমান্য করলে সাথে সাথে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে