


সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গাছ কাটা নিয়ে পরিবেশবিদ ও নগরবিদসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে সরকার। তাদের মতামতের ভিত্তিতে প্রয়োজনে প্রকল্প এলাকার নকশা পরিবর্তন হতে পারে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
মঙ্গলবার (১১ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলমান ‘স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (৩য় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্প বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
তিনি আরও বলেন, ‘ওয়াকওয়ে নির্মাণের জন্য গাছ কাটা হলে তা দুঃখজনক। যদি এমন হয়, নিশ্চয়ই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। দায়িত্ব পালনে অসাবধান হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। কোন প্রেক্ষাপটে গাছ কাটা হয়েছে তা যাচাই করে দেখা হবে। সেখানে ব্যত্যয় ঘটেছে কি-না দেখব। যারা প্ল্যান করেছেন, তাদের নিয়ে সরেজমিনে দেখে, যদি গাছ কাটায় সতর্ক না থাকে তবে ব্যবস্থা নেব।’
মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনে বিভিন্ন সময়ের আন্দোলন ও ঘটনাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার উদ্দেশ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় ঐতিহাসিক সােহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইতােমধ্যে শিখা চিরন্তন, স্বাধীনতা স্তম্ভ ও ভূগর্ভস্থ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রভৃতি নির্মাণ করা হয়েছে। সােহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণ, আধুনিক নগর উপযােগী সবুজের আবহে আন্তর্জাতিকমানে গড়ে তােলা ও দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে সােহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (৩য় পর্যায়)’ শীর্ষক মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এত বড় এলাকায় এত মানুষের সমাগম হয় তাতে কোনো টয়লেট ফ্যাসিলিটিজ এবং রিফ্রেশমেন্টের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। পরিবারসহ দর্শনার্থীরা উদ্যানে যাতে ভ্রমণ করতে পারে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার পাশাপাশি নিরাপদ ও মানসম্পন্ন পরিবেশে কয়েক ঘণ্টা সময় কাটাতে পারে, তার সব ব্যবস্থা এখানে করা হচ্ছে। বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যােগাযােগমাধ্যমে খাবারের দোকান-ভাতের হােটেল ইত্যাদি বানানাের জন্য গাছ কাটা হচ্ছে মর্মে যে অপপ্রচার চালানাে হচ্ছে, তা সত্যিই দুঃখজনক। প্রকৃতপক্ষে, মুক্তিসংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সাথে সম্পর্কিত স্থানসমূহ সংরক্ষণে মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ। সেই আলােকে সােহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্থানসমূহ সংরক্ষণ করা হচ্ছে।’
‘সােহরাওয়ার্দী উদ্যানে গৃহীত মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সােহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছােট-বড় কিছু সংখ্যক গাছ কাটা হলেও প্রথম পর্যায়ে প্রায় এক হাজার গাছ লাগানাের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, যা ইতােমধ্যেই আমরা আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে অবহিত করেছি। এ লক্ষ্যে দেশের প্রখ্যাত উদ্ভিদবিদ-উদ্যানতত্ত্ববিদদের সমন্বয়ে একটি কমিটি করা হচ্ছে।’