পর্দা নামলো নবম বাংলাদেশ গেমসের

0
36

পর্দা নামলো সংক্ষিপ্ত নবম বাংলাদেশ গেমসের। এই দশদিন যেসব যেসব ক্রীড়াবিদ পারফরম্যান্স করেছেন তাদের নিয়ে তৈরি করা ভিডিও ফুটেজ দেখানো হয়েছে। স্টেডিয়ামে দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা মশালটি যখন নিভে যায় অনেকেরই খারাপ লাগছিল। আবার কবে হবে খেলার লড়াই।

বিওএর মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা বললেন, ‘আমরা যুব গেমসটি শুরু করেছিলাম কথা ছিল দুই বছর পর পর যুব গেমস এবং বাংলাদেশ গেমস হবে। কিন্তু করোনায় সবকিছু কঠিন হয়ে যাচ্ছিল গতবছর গেমস করতে চেয়েও হয়নি। এবার না হলে আবার কবে হতো তারও কোনো নিশ্চিয়তা নেই। লকডাউনের কারনে অনেক কিছুই বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল।

তিনি বলেন, আমরা এতো ক্রীড়াবিদদের অংশগ্রহনের মধ্যে যখন খেলাটা শুরু করেছি। তখন লকডাউনের কথা শুনে আরো সাবধানতার সঙ্গে অবশিষ্ট খেলাগুলো শেষ করতে পেরেছি, সেটা করতে হয়েছিল স্বাস্থ্যবিধিটাকে আরো কঠিন করে। সবাইকে গ্রামের বাড়িতে পাঠানোর কাজটিও আমাদের জন্য সহজ ছিল না। একজন ক্রীড়াবিদ যেন সমস্যায় না পড়ে।’

তবে এই গেমসে ব্যর্থ হয়েছেন টোকিও অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করা আর্চারির রোমান সানা, শ্যুটার আব্দুল্লাহেল বাকি হতাশ করেছেন। শ্যুটিং, সাঁতার, সাইক্লিং, আর্চারি, ব্যাডমিন্টন, ভারোত্তোলনের মতো খেলাগুলোতে নতুন ক্রীড়াবিদের সন্ধান পেয়েছেন ফেডারেশন কর্মকর্তারা। ব্যাডমিন্টনে উর্মি আক্তার নিজেকে তুলে ধরেছেন। শ্যুটিংয়ে আনজিলা আক্তার, আর্চারিতে অসীম কুমার, সাইক্লিংয়ে বিশ্বসা ফয়সালদের জন্য এই গেমস ছিল নতুন পথচলা।

২০১৩ সালের অষ্টম বাংলাদেশ গেমসে নতুন রেকর্ড হয়েছিল ২২টি। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ গেমসে ৩১ ডিসিপ্লিন ঠিক থাকলেও করোনার কারণে ক্রীড়াবিদদের সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছিল। তার পরও এবার গেমসে ছিল রেকর্ডের ছাড়াছড়ি। নতুন জাতীয় রেকর্ড হয়েছে ৬০টি। ভারোত্তোলনে ৩৪টি, সাইক্লিংয়ে ১৩টি, সাঁতারে ১১টি এবং ১টি আর্চারি ও ১টি অ্যাথলেটিকসে।

ভারোত্তোলনে সর্বাধিক তিনটি করে রেকর্ড গড়েন টানা দু’টি এসএ গেমসে সোনাজয়ী ভারোত্তোলক আনসারের মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। তিনি রেকর্ড গড়েন ৬৪ কেজি ওজন শ্রেণীতে।

খেলার আনন্দে গতকাল নবম বাংলাদেশ গেমসের মশাল নিভেছে। নতুন শপথে মশাল নিভেছে। বিওএর মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা জানিয়েছেন ২০২৩ সালে যুব গেমস এবং ২০২৫ সালে দশম বাংলাদেশ গেমস অনুষ্ঠিত হবে।

শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ৪৮ মিনিটে নিভে গেলো মশাল। শনিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বঙ্গবন্ধু ৯ম বাংলাদেশ গেমসের আনুষ্ঠানিক সমাপনী ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। বঙ্গবন্ধু ৯ম বাংলাদেশ গেমসের সমাপনী অনুষ্ঠানের ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন বিওএ সভাপতি ও সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।

বিকেল সাড়ে পাঁচটায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের গেট উন্মুক্ত করা হয়। সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে পবিত্র কোরআন তিলওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সমাপনী অনুষ্ঠান। এরপর জাতীয় সংগীত বেজে উঠে। মাঠে স্থাপিত দুটি জায়ান্ট স্ক্রিনে ভেসে ওঠে লাল সবুজের পতাকা। জাতীয় সংগীতের পরপরই শুরু হয় অতিথিদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য। ৬টা ৫৫ মিনিটে গেমস আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন বিওএর সভাপতি ও সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।

সন্ধ্যা ৭টা ৩ মিনিটে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এমপি।

সন্ধ্যা ৭টা ৩৯ মিনিটে অনুষ্ঠিত পায়রোর মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয় ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের চিত্রপট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ, স্বাধীনতা যুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর পরিবার ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি। সন্ধ্যা ৭টা ৪৭ মিনিটে বিউগলে করুণ সুর বেজে বেজে ওঠে। নিভে যায় মশাল। আতশবাজির আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে আকাশ। সমাপ্তি ঘটে বঙ্গবন্ধু ৯ম বাংলাদেশ গেমসের। ১ এপ্রিল সন্ধ্যা সাতটা ৪১ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ গেমসের শুভ উদ্বোধন করেছিলেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে