বাংলা নববর্ষে সব বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় মঙ্গল শোভাযাত্রা হবে

0
572

আগামী পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের পাশাপাশি দেশের সব বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হবে।

সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের সভাপতিত্বে আজ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা ভবনের সেমিনার কক্ষে আন্ত:মন্ত্রণালয়ের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। বাংলা নববর্ষ ১৪২৪’ উদযাপনের লক্ষ্যে এই সভার আয়োজন করা হয়।
এক আজ এ নির্দেশনা দেন। সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর

‘পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা’ ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় জাতীয় গৌরবের এই বার্তাটি সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়ার লক্ষে দেশব্যাপী মঙ্গল শোভাযাত্রা করা হবে।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো: ইব্রাহিম হোসেন খান, অতিরিক্ত সচিব মো: মশিউর রহমান, যুগ্ম সচিব ফয়জুর রহমান ফারুকী প্রমুখ। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পুলিশ, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, শিশু একাডেমি, ছায়ানট, গণগ্রন্থার অধিদপ্তর, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, বিভাগ ও সংস্থার প্রতিনিধিরা এতে উপস্থিত ছিলেন।

সভায় আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আমরা এমন একটি সময়ে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছি যখন আমরা দেখতে পাই যে, আমাদেরই পরিজনদের পরিবারের পাঁচটি সন্তান ধর্মের নামে, ইসলামের নামে ২০ জন মানুষকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করেছে। একারণে আমি মনে করি আমাদের নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর ভেতর দিয়ে আমরা সারা পৃথিবীর কাছে আমাদের ঐহিত্যের পরিচয় তুলে ধরতে চাই।

তিনি বলেন, তাদের জানাতে চাই আমরা জাতি হিসেবে অসাম্প্রদায়িক, সহনশীল এবং সব ধর্মের মানুষ সহঅবস্থান করছি। আমাদের মধ্যে জঙ্গীবাদের কোন স্থান নেই। এখানে পাঁচ জন জঙ্গী দিয়ে বাংলাদেশকে চিহ্নিত করা যাবে না।

মন্ত্রী বলেন, এবারের নববর্ষ উদযাপনের মধ্যে দিয়ে সারা বিশ্বকে এই বার্তাটিই দিতে চাই সমগ্র বাঙালী জাতিই জঙ্গীবাদকে প্রত্যাখ্যান করেছে । সে জন্য এই নববর্ষ আরো ব্যাপক পর্যায়ে আরো নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে গোটা দেশে সমস্ত মানুষের অংশগ্রহণে উদযাপনের উদ্যোগ নিতে হবে। মন্ত্রী এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান, দপ্তর ও সংস্থাকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

সংস্কৃতি মন্ত্রী গ্রামগঞ্জের কুটির ও হস্তশিল্পকে উৎসাহিত করতে বাংলাদেশ কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) কে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় নববর্ষ উপলক্ষে মেলা আয়োজনের পরামর্শ দেন।

প্রতিবারের মতো এবছরও নববর্ষের দিন আইন-শৃংখলা রক্ষায় তিন স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিরা সভাকে জানান। শব্দদূষণ রোধে নববর্ষে ভুভুজেলা বাজানো বন্ধেরও নির্দেশ দেয়া হয়।

নববর্ষের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণীসহ জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ, রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ উৎসব, সব বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান , আলোচনাসভা ও গ্রাম্য মেলার আয়োজন, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে তিন দিনব্যাপি নববর্ষের অনুষ্ঠানমালার আয়োজন, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নববর্ষের অনুষ্ঠানমালার আয়োজন, বাংলা একাডেমি ও বিসিক-এর উদ্যোগে বৈশাখী মেলার আয়োজন, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের আয়োজনে সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘরে লোকশিল্প মেলার আয়োজন, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব উদ্যোগে নববর্ষ উদযাপন, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনসমূহে নববর্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউট ও একাডেমিতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠান আয়োজন, স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে রচনা প্রতিযোগিতা এবং সরকারি ও বেসরকারি গণমাধ্যমে নববর্ষ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে