করোনা লকডাউনে বাংলাদেশের পথপ্রাণীদের খাবার সংকট।

0
679

কোভিড -১৯ লকডাউনে চলাকালীন বাংলাদেশে পথ প্রানীদের খাবার সংকট। সংশ্লিষ্টদের সঠিক সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা না থাকায় সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর কাজেও তৈরি হচ্ছে প্রতিবন্ধকতা। হোটেল রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় রাস্তায় কোন খাবার পাচ্ছেনা পথ প্রাণীরা। খাদ্যসংকটে ওদের আচরণে পরিবর্তন আসা শুরু হয়েছে।

রাজশাহী ও পিরোজপুরে কুকুর হিংস্র হবার ঘটনা গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে লক ডাউনের দ্বিতীয় সপ্তাহে। ঢাকার বিভিন্ন লক ডাউন এলাকা থেকে কুকুর বিড়াল মারা যাবার খবর আসছে প্রায় প্রতিদিনই। এছাড়া পশু পাখির মাধ্যমে কোভিড ১৯ ছাড়ায় এমন গুজবে ওদের উপর বাড়ছে অন্যায়। এই দুর্যোগকালীন সময়ে পোষা প্রাণী থাকার জন্য ভাড়াটিয়াদের বাসা ছাড়তে বলা হচ্ছে, খাবার দেয়া বন্ধ করা হচ্ছে, সেচ্ছাসেবীদের কাজ করতে বাধা দেয়া হচ্ছে।

রাজধানীর বনশ্রী, মোঃপুরসহ কয়েক জায়গায় আবাসিক সোসাইটির অফিস থেকে খাবার দিতে বাধা দেয়া হচ্ছে। ঢাকার মধ্যে বেশ কিছু সক্রিয় সেচ্ছাসেবী সংগঠন থাকায় পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক মনে হলেও ঢাকার বাইরে লক ডাউনে পথ প্রাণীদের অবস্থা বেশ সংকটময়।

খাবার সংকটে এদের মৃত্যু মানুষের বসবাসের পরিবেশ বিপর্যয় ডেকে আনবে। এদের মৃতদেহ পরিবেশে তৈরি করবে নতুন সংকট। এখন এটা সবার বোঝা আর এই নিয়ে সচেতন হওয়া খুব জরুরী।

যতটা সম্ভব সবাইকে তার চারপাশের পশু পাখিদের খাবার দিতে হবে। ধারণা করা হয় শুধু ঢাকায় কুকুর আছে পাঁচ হাজারের বেশি। বিড়াল খরগোশ, পাখি সহ অন্যান্য প্রানী আছে প্রচুর। শুধু ব্যাক্তিগত উদ্দ্যোগ বা সেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে এত প্রাণীর খাবার যোগান দেয়া সম্ভব নয় কোন ভাবেই।

গত মার্চের ২৪ তারিখ থেকে কোভিড-১৯ সংক্রমন ঠেকাতে অঘোষিত লক ডাউন শুরু হয় বাংলাদেশে। রাজধানীর সহরোয়ার্দি উদ্দ্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু অংশে প্রায় একশ কুকুর কে প্রতিদিন রান্না করা খাবার দিচ্ছে পথ প্রানীদের নিয়ে কাজ করা সেচ্ছাসেবী সংগঠন এনিমেল লাভারস অফ বাংলাদেশ (এএলবি)।

গত পাঁচ বছর যাবত এ-ই এলাকায় নিয়মিত খাবার দিচ্ছে এএলবি প্রতিষ্ঠাতা দীপান্বিতা হৃদি.লক ডাউন সময়কালে একশ কুকুরকে খাবার দিতে তার দৈনিক খরচ হচ্ছে প্রায় দেড় হাজার টাকা। লকডাউন বাড়ার কারনে একার উদ্দ্যোগে এই কর্মসূচী বেশি দিন চালনো বেশ কষ্টকর। আরও বেশি দিন লক ডাউনের সময় বাড়লে এই কাজ চালিয়ে নেয়া সম্ভব না বলে জানান দীপান্বিতা।

লক ডাউনে কুকুরকে খাবার দেয়ার এই কর্মসূচী নিয়মিত চালু রাখতে প্রয়োজন সরকারি ব্যবস্থাপনা, প্রসাশনিক সহোযোগিতা, সংশ্লিষ্টদের সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা, প্রয়োজনীয় বরাদ্দ আর গুজবের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমের দ্বায়িত্বশীল আচরণ।

কোভিড-১৯ সংকটে সারা পৃথিবীর পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় মানুষের পাশাপাশি অন্যান পশু পাখিদেরও বেঁচে থাকা গুরুত্বপূর্ণ.আর শুধু সেচ্চাসেবী সংগঠনগুলোর সরবারহ করা খাবার প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।এর জন্য আলাদা বরাদ্দ ছাড়া সারা দেশে এই কাজ সমন্বয় করা সম্ভব নয়। সবার সচেতনতা ও মানবিক আচরণ এই সংকটের মুক্তির একমাত্র পথ। প্রতিনিধি: স্বাধীন চক্রবর্তী। ছবি : সানাউল কবির ও মীর মোক্দ্দেস আলী

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে