পূর্বাচলে প্লট অনিয়ম: রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান ও পারটেক্স পরিচালক গ্রেপ্তার

0
467


শুক্রবার ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ (নোঙরনিউজ ডটকম): অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে প্লট বরাদ্দ দেওয়া ও নেওয়ার অভিযোগের মামলায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল উদ্দিন চৌধুরী ও পারটেক্স গ্রুপের পরিচালক শওকত আজিজ রাসেলকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে গ্রেপ্তারের পর দুপুরে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গত বুধবার রাত ১১টায় রাজধানীর মতিঝিল থানায় দুদকের উপসহকারী পরিচালক সিলভিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে ওই দুজনসহ অটজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলাটি দায়ের করেন। মামলার বাদী নিজেই তদন্ত করছেন। গতকাল ভোরে ইকবাল উদ্দিন চৌধুরীকে তাঁর পরিবাগের বাসা ও শওকত আজিজ রাসেলকে গুলশানের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে দুদক। গ্রেপ্তারে নেতৃত্ব দেন দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল, সঙ্গে ছিলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলভিয়া ফেরদৌস।
ইকবাল উদ্দিন চৌধুরী গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়েরও সাবেক সচিব। শওকত আজিজ রাসেল পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বিএনপির সাবেক এমপি এম হাশেমের ছেলে।

এই মামলার অন্য ছয় আসামি হলেন—এম হাশেমের আরেক ছেলে পারটেক্স গ্রুপের পরিচালক আশফাক আজিজ রুবেল; রাজউকের পাঁচ সাবেক সদস্য ও কর্মকর্তা হলেন—এস ডি ফয়েজ, এ কে এম ওয়াহেদুল ইসলাম, এস এম জাফরুল্লাহ, এইচ এম জহিরুল হক ও রেজাউল করিম তরফদার। দুদক সূত্র বলেছে, বাকি এই ছয় আসমিকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তাঁরা অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে রাজউকের ২০ কাঠা প্লট বরাদ্দ দেওয়া ও নেওয়ার কাজে জড়িত ছিলেন। ২০০৪ সালে রাজধানীর পূর্বাচলে শওকত আজিজ রাসেলের নামে ১০ কাঠা ও আশফাক আজিজ রুবেলের নামে ১০ কাঠা করে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। ইকবাল উদ্দিন চৌধুরী ২০০১ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত সময়ে রাজউকের চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০০৪ সালে পূর্বাচলে এই ২০ কাঠার প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয় বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

ইকবাল উদ্দিন চৌধুরী ও শওকত আজিজ রাসেলকে গতকাল ভোরে গ্রেপ্তারের পর দুপুরে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত সিকদারের আদালতে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে দুদক। আদালত রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে এই দুই আসামির জামিন চেয়ে আবেদন করা হলে সেটিও খারিজ করেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে যেকোনো দুই দিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন আদালত।
আসামিদের বিরুদ্ধে এই প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ দুদকে আসে। এরপর দুদক অভিযোগটি প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধান করে। অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে গত ২২ জানুয়ারি ইকবাল উদ্দিন চৌধুরীসহ অন্য সাত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সভাপতিত্বে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ অনুষ্ঠিত হয়।
রাজউক সূত্র জানায়, ২০০১ সালের অক্টোবরে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর রাজউকের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন ইকবাল উদ্দিন চৌধুরী। মির্জা আব্বাসের ঘনিষ্ঠ ইকবাল উদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাজউকে দায়িত্ব নিয়ে নিজের পছন্দের লোকজনকে বিভিন্ন পদে বসানোর অভিযোগ রয়েছে। বিসিএস রেলওয়ে ক্যাডারে সহবিভাগীয় প্রকৌশলী হিসেবে যোগদানকারী ইকবাল উদ্দিন চৌধুরী তত্কালীন সরকারের আস্থা অর্জন করে রাজউকের পর পূর্ত সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পান। নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ থাকা ইকবাল উদ্দিন চৌধুরীকে এক-এগারোর সময় গ্রেপ্তারও করা হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে