বাংলাদেশে যিনি পরবর্তী প্রধান নির্বাচন কমিশনার হতে যাচ্ছেন, সেই কে এম নুরুল হুদা বলছেন, তিনি নিরপেক্ষভাবে এবং আইনের ভিত্তিতে কাজ করার ‘শতভাগ নিশ্চয়তা’ দিচ্ছেন। আগামী নির্বাচনে বিরোধীদল বিএনপি অংশ নেবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মি. হুদা বলেন, নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করা – এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিষয়।
তিনি বলেণ, “আমরা আমাদের কাজের মাধ্যমে আমাদের নিরপেক্ষতা এবং পক্ষপাতিত্বহীনতা দেখাবো, সব দলের আস্থা অর্জন করবো। আশা করি, বিএনপি গামামী নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে।”
বিবিসি বাংলার মিজানুর রহমান খানকে দেয়া সাক্ষাতকারে মি. হুদা বলেন, “এটাকে অনেক বড় দায়িত্ব এবং চ্যালেঞ্জিং দায়িত্ব হিসেবেই নিয়েছি। চ্যালেঞ্জটা হলো, পরবর্তী নির্বাচনটি – যা ২০১৮ বা ২০১৯এর শুরুতে, যখনই হোক – তা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পাদন করা।”
বাংলাদেশের প্রধান বিরোধীদল বিএনপি গত ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে নি। সে জন্য এ নির্বাচন নিয়ে অনেক বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
আগামি নির্বাচনে বিএনপি যে আসবে – তার ব্যাপারে কিভাবে আশ্বস্ত করা হবে – এমন এক প্রশ্নে জবাবে কে এম নূরুল হুদা বলেন, আমাদের কাজকর্মেই আমরা দেখাবো যে আমরা নিরপেক্ষ, আমরা কোন পক্ষপাতিত্বের মধ্যে নেই।
‘আমাদের কাছে কোন দল নেই । আমাদের কোন রাজনীতি নেই। আমাদের সামনে আছে সংবিধান ওআইন, নিরপেক্ষতা। সেটা দেখাবো। তাতে তারা আশ্বস্ত হবে আশা করি। আশা করি নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করবে।
একটি সুষ্ঠু, অবাধ এবং দলীয় প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের নিশ্চয়তা তিনি কতটা দিতে পারেন, এ কথা জানতে চাওয়া হলে, মি. হুদা বলেন, ‘ওয়ান হান্ড্রেড পার্সেন্ট নিশ্চয়তা দিতে পারি।’
“কমিশনে যারা আছেন এবং আমরা – কখনো কারো কথায় কাজ করি না, কারো কথায় প্রভাবিত হই না। আমরা নিরপেক্ষভাবে আইনের ভিত্তিতে কাজ করবো।
সবার কাছে নির্বাচন কমিশনকে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য কি করবেন, এ প্রশ্নে জবাবে সিইসি বলেন, “প্রয়োজন হলে সিভিল সোসাইটির লোকজনের সাথে কথা বলবো। যদি প্রয়োজন হয়, এবং তারা যদি চান – তাহলে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সাথেও কথা বলবো, তাদের মতামত নেবো।”
“তাদের মতামত নিয়ে যেসব সমস্যা আছে তা আইন ও সংবিধানের মধ্যে থেকে সমাধানের চেষ্টা করবো। ”
মি. হুদা বলেন, তিনি অত্যন্ত নিরপেক্ষভাবে এবং সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ও বিধানের মধ্যে যা আছে সেভাবে কাজ করতে চান।
নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা তৈরি জন্য কি করবেন? এ প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, আমরা কাজ করে দেখাবো যে আমরা আস্থাশীল লোক।
“প্রশাসনিক এবং পলিসিগত কাজগুলো যখন করবো, তখন আমার বিশ্বাস যে আস্থা তৈরি হবে। এটা এক সপ্তাহের মধ্যে হবে না। ‘ওভার এ পিরিয়ড অব টাইম’ আমরা আস্থা অর্জন করার চেষ্টা করবো।”
সোমবার রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে কে এম নুরুল হুদাকে বেছে নেন।
এ ছাড়াও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে যে চারজনের নাম অনুমোদন করেছেন রাষ্ট্রপতি তারা হলেন- সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম কবিতা খানম, সাবেক সচিব মো: রফিকুল ইসলাম এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী।
খবরঃ বিবিসি।