২৩ মে ঘোষণা করা হোক জাতীয় নৌ-নিরাপত্তা দিবস

0
822

পদ্মা-মেঘনা-যমুনা নদীসহ নদীমাতৃক বাংলাদেশে প্রত্যেকটি নদী এখন উত্তাল। কারণ এখন চলছে কাল বৈশাখীর ভরা বর্ষাকাল। বর্ষা নামলে বেশ আনন্দ পাই তার কারণ প্রকৃতি মেঘ-বৃষ্টি হয়ে আমাদের নদ-নদীর তৃষ্ণা মেটায়। প্রতিবেশি উজানের বন্ধু রাষ্ট্র ভারত ফারাক্কা ও তিস্তা ব্যারেজসহ ৫২টি আন্ত:নদীতে বাধ দিয় বিভিন্ন রাজ্যে পনি সরিয়ে নিচ্ছে। যে কারণে শুস্ক মৌসুমে আমাদের দেশের বেশীরভাগ নদ-নদী পানিশুণ্য হয়ে মরুভুমি হয়ে যায়। আর বর্ষা কাল এলে নদীতে নেমে আসে নৌ-দূর্ঘটনার ভয়।

নদীর সাথে আমার বন্ধন মায়ের মতো গভীর। এই দিনে নদ-নদী সুরক্ষার কথা বলতে গেলে প্রথমেই মনের মধ্যে ভেসে ওঠে গর্ভধারিনী আমার মায়ের মুখ। মনে হয় নৌপথের যাত্রী নিরাপত্তার কথা। ২০০৪ সালের ২৩ মে মাস থেকে আমার কানে আজও নদীর কান্নার শব্দ ভাসে বেড়ায়। সে দিন মাদারীপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্য ছেড়ে আসা ১৫৬টি তালি দেয়া চলাচলের অযোগ্য লঞ্চ ‘এমভি লাইটিং সান’ ও ‘এমভি দিগন্ত’ মেঘনা নদীতে গভীর রাতে ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে গিয়ে ছিল। সমগ্র মেঘনা থেকে পদ্মা নদীতে সে রাতে কচুরিপানার মতো ঢেউয়ের সাথে ভাসেছিল দুই শতাধিক মৃতদেহ। সেই দিনের দানব লঞ্চের একজন যাত্রী ছিলেন আমার প্রিয় মা জননী যনি নিজের জীবন দিয়ে তার সঙ্গে থাকা পুত্রকে জীবন দান করে নদীতে মিশে গেছেন। আর সেই দিন থেকেই নদীর প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা মায়ের কথা মনে পড়লে ছুটে যাই নদীতে। ২৩ মে জাতীয় নৌ-নিরাপত্তা দিবস ঘোষণার দাবিতে নোঙর এ বছর নদীতে ভাসমান আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। নদীরাও চায় নৌ-নিরাপত্তা দিবস।

নদী নিরাপত্তা :
প্রাচীন কাল থেকেই বাংলাদেশের নৌপথ নিরাপদ ও সাশ্রয়ী এবং পরিববেশ ও গণবান্ধব যাতায়াত মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নৌপরিবহন ব্যবস্থাপনায় অপেশাদারীত্ব এবং মুনাফাকেন্দ্রীক মনোভাব ও দুর্নীতির কারণে এই খাতে এখনো ঝুঁকি রয়েছে।

এখনো নদীতে চলছে লঞ্চ চলাচলের প্রতিযোগিতা আর ঘটছে ছোট বড় দূর্ঘটনা। পাশাপাশি দিনে রাতে চলছে রির্ভাসিবল গিয়ার বিহীন বালুবাহী বাল্কহডে যা প্রায় সময় বিভিন্ন ধরণের যাত্রীবাহি নৌযানের চলাচলের প্রতিবন্ধকতা তৈরী করছে। এই ধরণের বাল্কহেডের আসল সংখ্যা আমাদের অজানা! চিন্তার বিষয় হচ্ছে যে, এখন ভরা বর্ষার মৌসুম আসন্ন ঈদের সময় লক্ষ লক্ষ নৌযাত্রী জীবন বাজি রেখে ফিরে যাবেন প্রিয় মানুরে কাছে। তাই যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে ২৩ মে কে জাতীয় ভাবে নৌ নিরাপত্তা দিবস ঘোষণার মাধ্যমে সরকারে সংশ্লিষ্টি কর্তৃপক্ষকে এখনই সতর্ক প্রস্তুতিগ্রহণ করা জরুরী।

দক্ষিণবঙ্গের উপকুল, উত্তরের হাওর ও নদী তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থার অন্যতম মাধ্যম নদীপথ।এক সময় দেশে নদী-নালা, খাল-বিল, হাওর-বাওর মিলে সর্বমোট প্রায় ২৪ হাজার কিলোমিটার নৌপথ ছিল। তার মধ্যে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের নৌ-সওপ বিভাগ বাংলাদেশের উপকূলীয় ও অভ্যন্তরীণ নৌপথে ১৯৬২ থেকে ১৯৬৭ পর্যন্ত নেদারল্যান্ডের সহায়তায় নদী জরিপ করে মোট ১৩ হাজার ৭শ ৭০ কিলোমিটার নাব্য নৌপথকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপথ কর্তৃপক্ষ সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করে ছিল।

পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে নদীতে পলিমাটি পড়ে নাব্যতা হ্রাস পেতে পেতে ১৯৮৮ সালে এসে নৌপথ ৫ হাজার ৯শ ৯৫ কিলোমিটার এসে দাঁড়ায়। এই বিস্তৃত নৌপথে উপকূল, হাওর ও নদীতীরবর্তী জেলাসমূহের বসবাসরত দরিদ্র জনসাধারণ শিশু, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে দৈনন্দিন প্রয়োজনে প্রতিদিনই পারাপার হচেছ এবং তাদের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। নৌপথগুলোর উপর যেমন মানুষের চাপ বাড়ছে তেমনি ক্রমশ কমছে সরকারি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়হীনতা, দুর্বল নজরদারি, ব্যবস্থাপনা ও যথাযোথ আইনকানুনের প্রয়োগের অভাব রয়েছে যে কারণে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নদীতে ঘটেগেছে অনেক নৌদূর্ঘটনা। যা অনেকের জীবনের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
গত একযুগ আগে গড়ে ওঠা ’নদী নিরাপত্তায় নিয়জিত সামাজিক সংগঠন নোঙর’ নৌপথের যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চতি করতে ধারাবাহিক ভাবে গণসচেতনতামূলক প্রচার প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে। যার কারণে আমাদের গণমাধ্যম এবং সরকারের কাছে নৌপথের যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিছুটা গুরুত্ব বেড়েছে। নোঙরসহ বি ফলে গত তিন বছর থেকে নদী ও হাওর অঞ্চলে যাত্রীবাহি ট্রলারডুবি এবং উপকূলীয় অঞ্চলে তেমন কোন লঞ্চ দুর্ঘটনা ঘটেনি।

বাংলাদেশে যাত্রীবাহী লঞ্চ-স্টিমার, সড়ক পথে পারাপারের জন্য ফেরি, মালামাল/পণ্যবাহী কার্গো, যাত্রী ও পণ্যবাহী ইঞ্জিনচালিত ট্রলার, হস্তচালিত নৌকা ইত্যাদি নৌযান ব্যবহার করে মানুষ তাদের দৈনন্দিন যোগাযোগ ও পরিবহণের চাহিদা পুরণ করছে। এই যোগাযোগ ও পরিবহণ ব্যবস্থায় অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন ইঞ্জিন দ্বারা পরিচালিত নৌযানের রুট, নৌযান দুর্ঘটনা ইত্যাদি সম্পর্কে জানার সুযোগ হলেও এর বাইরে থাকা ছোট ছোট রুটের নৌযানগুলো আলোচনায উঠে আসে না। এর কারণ হলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের বৃহত্তর কাজের ক্ষেত্রটি আন্তরিকতার সাথে নির্ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। বরঙ অভ্যন্তরীন নৌ কর্তপক্ষ তাদের কাজের ক্ষেত্রটি প্রতিনিয়তই সংকুচিত করে আনছেন। যেমন উত্তর বঙ্গের সাথে রেলওয়ে যাত্রী পারারের পথ হিসেবে ব্যবহৃত বাহাদুরাবাদ-বালাসি নৌবন্দরের স্টিমার সার্ভিস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অথচ সেখানে মানুষের প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়নি। বর্তমান রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে যাতায়াতকারী মানুষ ঝুঁকি নিয়ে নৌপথ পারাপার হচ্ছে এবং এই হার এখনো বেড়েই চলেছে।
উন্নত ও আধুনিক যাতায়াতের নামে নৌপথকে উপেক্ষার চোখে দেখে সড়ক পথের প্রতি বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। এজন্য অবশ্য নৌপথের লোকসানের বিষয়টি বারবার ফলাও করে প্রচার করা হলেও এর অন্তরালে রয়েছে পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতা, অবহেলা, দুর্নীতি ও অপেশাদারিত্ব। এ অবস্থায় মানুষ সাশ্রয়ী ও সহজ যোগাযোগের ক্ষেত্র হিসেবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ নৌ-পরিবহণ ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে পারাপার হচ্ছে।

৪. নদীমাতৃক দেশের নদীপথে এ পর্যন্ত যে সকল দুর্ঘটনা ঘটেছে সেগুলোসহ আগামী দিনের নৌচলাচল নিরাপদ করতে বর্তমান সরকার বেশ আন্তরিক ভাবে নৌপথের মনিটর করছে। বিগত সরকারের আমলেই মুষ্টিমেয় কয়েকটি রুটে সংঘটিত দুর্ঘটনা সরকার আমলে নিয়ে তদন্ত করেছে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এ পর্যন্ত দেশে ৫৩৫টি বড় ধরনের নৌ দুর্ঘটনা ঘটেছে যেখানে মৃতের সংখ্যা প্রায় ৬ হাজারেও বেশী। এ সকল দুর্ঘটনার পর সরকার দুর্ঘটনা তদন্তে এক বা একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এবং কমিটিগুলো দুর্ঘটনার প্রেক্ষাপটে কিছু পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা দিয়ে প্রতিবেদনও দাখিল করেছেন। অপর একটি পরিসংখ্যানে দেখাগেছে ৫৩৫টি নৌ দুর্ঘটনার বিপরীতে ৮৬৩টি তদন্ত কমিটি সুপারিশ প্রণয়ন করে প্রতিবেদন জমা দিলেও সেগুলো যেমন জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি তেমনি এগুলোর কোনো সুপারিশও বাস্তবায়িত হয়নি। এমও শোনা যায় যে, সম্পাদিত প্রতিবেদনগুলোর যে অংশে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে সেগুলোর ভিতরের পাতা উধাও হয়েছে এবং সংশ্লিষ্টদের অনেকের বিরুদ্ধেই অপরাধ বিষয়টি প্রমানিত হলেও তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয় নি। এ অবস্থায় বিভিন্ন মাধ্যম থেকে সংগৃহীত গত ২৫ বছরে উল্লেখযোগ্য নৌ দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ও প্রতিবেদনের অংশবিশেষ পর্যালোচনা করে তুলে ধরা হলো।

১৯৮৫ থেকে ২০০৯ সময় কালে (২৫ বছরে) উল্লেখযোগ্য নৌ দুর্ঘটনার সংগৃহীত সরকারি তদন্ত প্রতিবেদনে সর্বমোট ২৭৮টি সুপারিশ রয়েছে। যার অধিকাংশই প্রায় সকল প্রতিবেদনেই বিদ্যমান। ফলে এটাই সত্য যে, প্রতিবেদনের সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নের কোনো চেষ্টাই হয়নি। এতে দিন দিন নৌ দুর্ঘটনার বিষয়টি আরো জটিল আকার ধারণ করেছে।

অনিরাপদ নৌ পথ; দুর্ঘটনা এবং মৃত্যুই যেখানে নিশ্চিত
বাংলাদেশের নৌপথ অনিরাপদ ফলে দুর্ঘটনাই এখানে স্বাভাবিক ঘটনা। আর এই দুর্ঘটনার পেছনে রয়েছে বিশেষ শ্রেণীর নিয়ন্ত্রণ, গাফিলতি, অব্যবস্থাপনা-অবহেলা, অপেশাদারিত্ব এবং দুর্নীতি। দুর্ঘটনা ও প্রাণহানীর তথ্য বিশে¬ষণ করলেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। অনুসন্ধানে যে তিনটি মূলক্ষেত্রকে কারণ হিসেবে তুলে ধরা যায়, তা হলো; ১. দেশের দক্ষিণাঞ্চলে চলাচলরত লঞ্চ মালিকরা সুকৌশলে নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষকে নিয়ন্ত্রণে রেখে উপর্যুপরি মুনাফা লাভে ২০০২ সাল হতে মালিকগণ লঞ্চচালনায় নিয়ন্ত্রণসুচী বা রটেশন পদ্ধতির সূচনা করেন। ২. রোটেশন অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট দিনে শুধূ মাত্র একটি মালিকের লঞ্চ চলাচল করবে ফলে অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই ও ভাড়া আদায় সাপেক্ষ মালিকগণ একচেটিয়া লঞ্চ পরিচালনা করে থাকেন। ফলে যাত্রীরা ভিন্ন লঞ্চের প্রতিযোগীতার মাধ্যমে কম ভাড়া নির্ণয়ের সুযোগ হতে বঞ্চিত হয়ে পড়ছে এবং অনৈতিক বা চাপিয়ে দেওয়া নির্ধারিত ভাড়ায় যাতাওয়াত করতে যাত্রীরা বাধ্য হচ্ছে।

গত ১৮ বছরে লঞ্চডুবির ইতিহাস :
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-চাঁদপুরসহ বিভিন্ন নদীতে এ পর্যন্ত নৌ-পথে ১৮ বছরে ১৮টি লঞ্চ ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। মেঘনা, শীতলক্ষ্যা ও ডাকাতিয়া নদীতে এ পর্যন্ত এমভি রাজহংস, এমভি সালাউদ্দিন, এমভি অমিত এক্সপ্রেস, এমভি নাসরিন, এমভি লাইটিং সান, এমভি দিগন্ত, এমভি মহারাজ, এমএল মজলিশপুর, এমএল শাহ্পরান, এমভি মদিনার আলো, এমভি শরীয়তপুর ও এমএল সারস লঞ্চ ডুবিতে ২ সহস্রাধিক লোকের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া বাল্কহেডের সাথে সংঘর্ষে অল্পের জন্য বেঁচে যায় আল-বোরাক ও এমভি সোহাগ লঞ্চের ১১শ’ যাত্রী।২০০০ সালের ২৯ ডিসেম্বর ঈদুল আযহার রাতে ঢাকা থেকে মতলবের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা এমভি রাজহংসের সাথে ঢাকা-বরিশালগামী এমভি জলকপোত লঞ্চের সংঘর্ষ হলে মেঘনা নদীর মতলব উত্তরের ষাটনল স্থানে লঞ্চটি ডুবে যায়। এতে মতলব উত্তর ও দক্ষিণ উপজেলাসহ অন্যান্য এলাকার ১শ’ ৬২ জনের প্রাণহানি ঘটে।

১. ২০০২ সালের ৪ এপ্রিল রাত সাড়ে নয়টায় এমভি সালাউদ্দিন-২ নামক তিন তলা লঞ্চটি ঢাকা থেকে ভোলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গিয়ে মেঘনা নদীর মতলব উত্তরের ষাটনল স্থানে কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। এতে ৫ শতাধিক যাত্রীর মধ্যে ৩শ’ ৬৩ জন প্রাণ হারায়। এদের মধ্যে বেশির ভাগ যাত্রী ছিলো ভোলা ও পটুয়াখালীর। অনেকের লাশ শনাক্ত করতে না পারায় ষাটনল পর্যটন কেন্দ্রের পাশে গণকবর দেয়া হয়ে ছিল।

২. ২০০৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পারিবারিক নৌ-বিহারে আসা এমভি অমিত এক্সপ্রেস মেঘনা নদীর মতলব উত্তরের আমিরাবাদ এলাকায় হঠাৎ ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। এতে ২৯ জন যাত্রীর মধ্যে ১১ জন মৃত্যুবরণ করেন।

৩. ২০০৩ সালের ৮ জুলাই ঢাকা থেকে লালমোহনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা এমভি নাসরিন অতিরিক্ত যাত্রী ও মাল বোঝাইয়ের কারণে চাঁদপুরে মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থলে ডুবে যায়। এতে ১ হাজার ৫শ’ যাত্রীর মধ্যে ১শ’ ২৮ পরিবারের ৮শ’ লোক মারা যায়।
৪. ২০০৪ সালের ২২ মে এমভি লাইটিং সান ও এমভি দিগন্ত নামে দুটি লঞ্চ মেঘনা নদীর চাঁদপুরের আনন্দ বাজার স্থানে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে ডুবে যায়। এতে এমভি লাইটিং সানের ৮১ জন ও এমভি দিগন্তের প্রায় ১শ’ জন লোক প্রাণ হারায়।

৫. ২০০৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকা থেকে মতলবের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা এমভি মহারাজ লঞ্চটি মেঘনা ও শীতলক্ষ্যার মিলনস্থানে অপর একটি লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যায়। এতে ২৫০ জন যাত্রীর মধ্যে প্রায় ১শ’ ৫০ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে সবই ছিল মতলব উত্তর এবং দক্ষিণ উপজেলার।

৬. ২০০৪ সালের ১২ মে মেঘনা নদীর ভৈরবে এমএল মজলিশপুর লঞ্চটি দেড় শতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়। এদের মধ্যে ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

৭. ২০০৬ সালের মেঘনা নদীর মেঘনা সেতুর নিকটবর্তী স্থানে এমএল শাহ্পরান নামে একটি লঞ্চ কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। এতে ১৯ জন যাত্রী প্রাণ হারায়।

৮. ২০১১ সালের ৬ জুলাই বুধবার সন্ধ্যায় শীতলক্ষ্যা ও মেঘনার মিলনস্থানে মুন্সিগঞ্জের চরমুক্তাপুর স্থানে তেলবাহী কার্গোর সাথে ধাক্কা খেয়ে এমভি মদিনার আলো লঞ্চটি শতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়। এদের মধ্যে প্রায় অর্ধশত লোকের মৃত্যু ঘটে।

৯. ২০১২ সালের ১২ মার্চ রাত ২টার সময় ঢাকা থেকে শরীয়তপুর যাওয়ার পথে মেঘনা নদীর মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় একটি কার্গোর সাথে ধাক্কা খেয়ে এমভি শরীয়তপুর-১ লঞ্চটি ৩ শতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়। এর মধ্যে ১ শতাধিক যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।

১০. ২০১৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকালে নারায়ণগঞ্জ-মতলব মাছুয়াখালগামী এমএল সারস লঞ্চটি নারায়ণগঞ্জ থেকে ছেড়ে সকাল পৌনে ৮টার দিকে মেঘনা নদীর মুন্সিগঞ্জের ইস্পাহানিরচর নামক স্থানে বালুবাহী কার্গোর সাথে ধাক্কা খেয়ে শতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়। এতে অর্ধ শতাধিক লোকের মৃত্যু ঘটে। ১৮ জনের লাশ পেলেও নিখোঁজ রয়েছে আরো অনেকে।

১১. এছাড়া ২০১২ সালের ২৮ এপ্রিল চাঁদপুর থেকে ঢাকাগামী লঞ্চ আল-বোরাক মেঘনা নদীর মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল লঞ্চঘাটের অদূরে মুন্সিগঞ্জের সীমানায় বালুবাহী ডুবন্ত বাল্কহেডের সঙ্গে আটকে যায় এবং আল-বোরাক লঞ্চের তলা ফেটে যায়। লঞ্চের যাত্রীদের চিৎকার শুনে আশপাশে থাকা লঞ্চ ও ট্রলার যাত্রী উদ্ধার করে। লঞ্চে থাকা ৬ শতাধিক যাত্রী প্রাণে রক্ষা পায়।

১২. ২০১২ সালের ২৯ এপ্রিল বাউফল পাতাবুনিয়া থেকে ঢাকাগামী লঞ্চ এমভি সোহাগ মেঘনা নদীর মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল লঞ্চঘাটের অদূরে মুন্সিগঞ্জের সীমানায় বালুবাহী ডুবন্ত বাল্কহেডের সাথে আটকে যায় এবং লঞ্চের তলা ফুটা হয়ে পানি উঠে বাল্কহেডের ওপর দেবে যায়। আল-বোরাক লঞ্চটি উদ্ধারের আধা ঘণ্টা পর একই ডুবন্ত বাল্কহেডের ওপর সোহাগ লঞ্চটি আটকা পড়ে। জানা যায়, বাউফল পাতাবুনিয়া থেকে এমভি সোহাগ লঞ্চটি ৫ শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিল। দুর্ঘটনার পর বরিশাল থেকে আসা লঞ্চ সোহাগ লঞ্চের যাত্রীদের উদ্ধার করে ঢাকা নিয়ে যায়। সকল যাত্রী প্রাণে বেঁচে যায়।

১৩. ২০১৪ সালের ১৫ই মে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীতে এমভি মিরাজ-৪ এবং এর মাত্র ১২ দিন আগে ৩রা মে পটুয়াখালীর গলাচিপায় রামদাবাদ নদীতে এমভি শাতিল-১ দুর্ঘটনাকবলিত হয়। দুর্ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নথিপত্র যাচাই, লঞ্চ দুটির নকশা ও অবকঠামো পরীক্ষা এবং তদন্ত কমিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতামত থেকে জানা গেছে, যথেষ্ট ত্রুটিপূর্ণ থাকা সত্ত্বেও এ দুটি যাত্রীবাহী নৌযানকে ফিটনেস সনদ দেয়া হয়েছিল।

অবকাঠামোগত মারাত্মক ত্রুটির কারণেই সামান্য কালবৈশাখী ঝড়ের আঘাতে ভারসাম্য হারিয়ে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে লঞ্চ দুটি ডুবে যায়। আবার ঝড়ো মৌসুমের কারণে ওই সময় পটুয়াখালী-গলাচিপা রুট চলাচলের অনুপযোগী থাকা সত্ত্বেও বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিট্রা শাখা বিধি ভঙ্গ করেই এমভি শাতিল-১ লঞ্চটিকে চলাচলের সুযোগ দিয়েছিল। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদনে এ বিষয়গুলোকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।

১৪. আগস্ট ৪, ২০১৪ তারিখে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌপথে মাওয়া ঘাটে পদ্মা নদীতে পিনাক-৬ লঞ্চ ডুবে যায়। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। লঞ্চটি শরীয়তপুরের কাওড়াকান্দি থেকে মাওয়া লঞ্চঘাটে যাচ্ছিল। যাত্রীবাহী লঞ্চ এমএল পিনাক-৬ দুর্ঘটনার পর গঠিত তদন্ত কমিটির দেয়া প্রতিবেদনেও প্রকৃত অপরাধীদের রেহাই দিতে দুর্ঘটনার মূল কারণকে গৌণ দেখিয়ে লঞ্চটির ফিটনেস ও নিবন্ধন প্রদানকারী এবং নকশা অনুমোদনকারী প্রকৌশলীদের দায়ী করা হয়েছে।

কারণ : অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন এবং প্রবল ¯্রােতের কারণে লঞ্চটি ডুবে যায় বলে ধারণা করা হয়। ১৯৯১ সালে তৈরি এমএল পিনাক-৬ লঞ্চটি শান্ত পানিতে চলাচলের জন্য সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর সনদ দেয়। এতে যাত্রী ওঠার কথা ছিল সর্বোচ্চ পঁচাশিজন। কিন্তু দুর্ঘটনার দিন এতে তিন থেকে চার গুণ যাত্রী উঠানো হয়ে ছিল।

উদ্ধার অভিযান: লঞ্চটি ডুবে গেলে আশপাশের লোকজন তাৎক্ষনিক উদ্ধারে এগিয়ে আসে। এতে প্রায় ১২০+ জনের মত যাত্রী বেঁচে যান। এরপর উদ্ধার তৎপরতায় অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড, বাংলাদেশ দমকল বাহিনী,বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, বাংলাদেশ পুলিশ, র্যা াপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান ও স্থানীয় জনগণ।

একই দিন সন্ধায় দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম। পরের দিন উদ্ধারতত্পরতায় কালক্ষেপণের অভিযোগ তুলে সড়ক অবরোধ করেন নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা। ৬ তারিখ বুধবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও বিআইডব্লিউটিএ পদ্মা নদীর ১০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তল্লাশি করে লঞ্চ শনাক্ত করতে ব্যর্থ হয়। লঞ্চ ডুবির পর বিভিন্ন জায়গায় নদীতে লাশ ভেসে উঠে। ৫ তারিখ চাঁদপুরের হাইমচরে মেঘনা নদী থেকে দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ৬ তারিখ চাঁদপুরের সদর উপজেলা ও হাইমচর এবং ভোলা সদর উপজেলার নদী থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। ৭ তারিখ উদ্ধারকারী জাহাজ কা-ারি-২ অনুসন্ধান করা শুরু করে ও সকাল থেকে দশটি লঞ্চ দুর্ঘটনাস্থল থেকে ভাটির দিকে ১০ কিলোমিটারজুড়ে অনুসন্ধান চালায়। পঞ্চম দিন উদ্ধার অভিযানে যোগ দেয় চট্টগ্রাম বন্দরের সার্ভে ভেসেল জরিপ-১০। এটির সাথে লঞ্চের সন্ধানে কা-ারি-২, অনুসন্ধান জাহাজ সন্ধানী, তিস্তা ও নৌবাহিনীর এলসিটি-০১২ অনুসন্ধান চালায়। উদ্ধার অভিযানের ষষ্ঠ দিন দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে কা-ারি-২ এর সাইড স্ক্যানার সোনারে নদীর নিচে একটি ধাতব বস্তুর অবস্থান ধরা পড়ে। পরে জেলা প্রশাসক নিশ্চিত করেন ধাতব বস্তুটি পিনাক নয়। সপ্তম দিনে স্থানীয় প্রশাসন নিখোঁজের সংখ্যা অর্ধেকে নিয়ে আসে। এ দিন সনাতন পদ্ধতিতে দুই দিন ধরে মাঝ পদ্মায় টোটকা অভিযান চালালেও লঞ্চটির কোনো হদিস পায়নি অভিযানকারী দল। একাধিক উদ্ধারকারী জাহাজ পিনাক-৬ উদ্ধারে ব্যর্থ হওয়ায় মেদেনীমন্ডল এলাকাবাসী টোটকা অভিযানের উদ্যোগ নেয়। অষ্টম দিন পিনাক-৬ লঞ্চের সব ধরনের উদ্ধার কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণ করেন মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক।

১৫. ২০১৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মানিকগঞ্জে পদ্মা নদীতে মাওয়া ঘাটের কাছাকাছি এমভি মোস্তফা নামের লঞ্চটি ডুবে যায়। সকাল ১১.৪৫ মিনিটের দিকে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। লঞ্চটি মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়া ঘাট থেকে দৌলতিয়া ঘাটে যাচ্ছিল।

কারণ: শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়া ঘাট থেকে এমভি মোস্তফা নামের লঞ্চটি কাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দৌলতিয়া ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ১৫ মিনিট পরই পাটুরিয়া লঞ্চঘাট থেকে প্রায় ৮০০ গজ দূরে সার বোঝাই নার্গিস-১ নামের কার্গো জাহাজ লঞ্চটির মাঝামাঝি স্থানে সজোরে ধাক্কা দেয় এতে লঞ্চটি উল্টে গিয়ে পানিতে ডুবে যায়।

উদ্ধার অভিযান : লঞ্চডুবির লঞ্চের ডেকে (লঞ্চের ওপরে) থাকা ৫০ থেকে ৬০ জন যাত্রী নদীতে লাফিয়ে পড়েন। এরপর তাঁরা জীবন রক্ষাকারী বয়া ও আশপাশের নৌযানে উঠে তীরে আসতে সক্ষম হন। লঞ্চডুবির পরপরই আশেপাশের লোকজন নৌকা ও ট্রলার নিয়ে প্রাাথমিকভাবে উদ্ধারকাজ শুরু করে। দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ পর বেশ কয়েরকজনের লাশ বেশে উঠতে থাকে। এরকিছু পর ঘটনাস্থলে ঢাকার ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল, কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশের সদস্যসহ সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ের শতাধিক উদ্ধারকর্মী এসে পৌঁছে। তাঁরা একযোগে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে লঞ্চের ভেতর থেকে নারী, পরুষ ও শিশুদের লাশ বের করে আনেন। দুর্ঘটনা পর পাটুরিয়া ঘাটে থাকা বিআইডব্লিউটিএর জাহাজ আইটি-৩৮৯ দিয়ে লঞ্চটির অবস্থান শনাক্ত করে ওই জাহাজের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। এরপর মাওয়া থেকে উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম রাত সোয়া ১১টার দিকে এসে অভিযানে যোগ দেয় এবং ডুবে যাওয়া লঞ্চটিকে ২৩ তারিখ সোমবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে নদী থেকে টেনে তীরে নিয়ে আসে। সেদিন সকাল ১০টার দিকে উদ্ধার অভিযান আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনায় ৭০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয় এর মধ্যে ২৭টি পরুষ, ২৪টি নারী ও ১৯টি শিশুর লাশ ছিল। স্বজনদের কাছে ৬৮টি লাশ হস্তান্তর করা হয়।

১৬. একইভাবে ২০১৬ সালের ৯ই ডিসেম্বর সুন্দরবনে তেলবাহী জাহাজ দুর্ঘটনায় সুন্দরবন বিপর্যয়ের কারণে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হলেও তদন্ত প্রতিবেদনে ত্রুটিপূর্ণ ওই জাহাজটিকে ফিটনেস ও নিবন্ধন প্রদানকারী কর্মকর্তাকে দায়ী করা হয়নি।

শুধু পক্ষপাতদুষ্ট তদন্ত প্রতিবেদন ও প্রকৃত অপরাধীদের রক্ষা করাই হচ্ছে না; তদন্ত কমিটিও অসম্পূর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ। কারণ নৌ মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত স্থায়ী তদন্ত কমিটিতে কোনো নৌ-প্রকৌশলী, পানিসম্পদ বিষেশজ্ঞ, নৌপরিবহন বিষয়ক গবেষক এবং মালিক ও যাত্রী প্রতিনিধি রাখা হয়নি। ত্রুটিপূর্ণ এই তদন্ত কমিটিই পিনাক-৬ ও সুন্দরবনে তেলবাহী জাহাজ দুর্ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে।

নদী পথে নিয়ম নীতি মেনে না চলায় প্রতি বছরই ঘটছে এমন নৌ দুর্ঘটনা। মেঘনা নদীর মোহনায় ব্যারিকেড সৃষ্টি করে একটি মহল অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। নদীতে এলোপাতাড়িভাবে বাল্কহেড ও ড্রেজার চলাচল ও রাখায় দেশের প্রধান নৌ-রুটটির এ স্থানটিতে নৌযান চলাচলে মারাত্মক হুমকি দেখা দিয়েছে। এছাড়া দুর্ঘটনার পর উদ্ধার কাজের জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী সরঞ্জামাদি ও জনবল না থাকায়, গাফলতির কারণে প্রাণহানি ও সলিল সমাধির সংখ্যা বাড়ছে।

সুমন শামস, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি,
নদী নিরাপত্তার সামাজিক সংগঠন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে