বহুপ্রত্যাশিত দ্বিতীয় ধরলা সেতুর উদ্বোধনে বিলম্ব: দীর্ঘায়িত হচ্ছে ভোগান্তি

0
569

কুড়িগ্রামের দ্বিতীয় ধরলা সেতুটির নির্মাণকাজ গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ সম্পন্ন হলেও উদ্বোধনে বিলম্ব হচ্ছে। ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা ও বন্যার কারণে এমনিতেই প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বাড়ানো হয়েছিল। এখন উদ্বোধনে দেরি হওয়ায় চার উপজেলার মানুষের দুর্ভোগও দীর্ঘায়িত হচ্ছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের কুলাঘাট এলাকায় ১৮৮ কোটি ১৭ লাখ ৫৮ হাজার ৫৭৫ টাকা ব্যয়ে দ্বিতীয় ধরলা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয় গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর। কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের মে মাসে। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৯৫০ মিটার ও প্রস্থ ৯ দশমিক ৮ মিটার। ২৬ মাসের মধ্যে কাজ সমাপ্ত করার কথা থাকলেও পরে এক বছর সময় বাড়ানো হয়।

এলজিইডির ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, ভূমি অধিগ্রহণ ও বন্যার কারণে দীর্ঘসময় কাজ বন্ধ ছিল। এ কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পের সময়সীমা এক বছর বাড়ানো হয়।

উপজেলা প্রকৌশলী আরো জানান, মূল সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৩৩ কোটি ৭২ লাখ ৫৬ হাজার ৯০৬ টাকা। বাকি টাকা ব্যয় হয়েছে ফুলবাড়ী অংশে ও লালমনিরহাট অংশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ, নদীশাসন, সেতু বিদ্যুতায়নে। এ সেতুর স্প্যানের সংখ্যা ১৯টি ও পিলারের সংখ্যা ১৮টি।

সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর কিছুদিন সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। কিন্তু কোনো নোটিস ছাড়াই আবার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

দ্বিতীয় ধরলা সেতুটির সুবিধা পাবে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার প্রায় সাত লাখ মানুষ এবং লালমনিরহাট সদর উপজেলার বাসিন্দারা। এ চার উপজেলার মানুষের দ্রুত যাতায়াতের সুবিধাসহ প্রসার ঘটবে ব্যবসা বাণিজ্যেরও।

ফুলবাড়ী উপজেলার বাসিন্দা নুর নবী জানান, সেতুটি খুলে দেয়া হলে ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার মানুষের লালমনিরহাট, রংপুর কিংবা ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগে ২ ঘণ্টা সময় বেঁচে যাবে। নৌকায় করে নদী পার হতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এ অঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দ্রুত চিকিৎসা সেবা ও ব্যবসায়িক কাজে সহজ যোগাযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নজির হোসেন বলেন, সেতুটি খুলে দেয়া হলে অবহেলিত এ জনপদের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা কেটে যাবে। দীর্ঘপথ ঘুরে আর রংপুর ও ঢাকায় যেতে হবে না।

ভুরুঙ্গামারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুন্নবী চৌধুরী বলেন, সেতুটি খুলে দিলে ভারতের সীমান্তলাগোয়া তিন উপজেলার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটবে। পাশাপাশি বঙ্গসোনাহাট স্থলবন্দর থেকে খুব সহজেই কয়লা, পাথরসহ অন্যান্য পণ্যসামগ্রী দেশের যেকোনো প্রান্তে পাঠাতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। এতে খরচও কমে যাবে।

দ্বিতীয় ধরলা সেতু চলাচলের জন্য খুলে দিতে দেরি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে সেতু সরকারের বাস্তবায়নকারী বিভাগ এলজিইডি কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ আব্দুল আজিজ বলেন, সেতুর নির্মাণ কাজ গত ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার পর আমরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সেতুটি উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছি। এখন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দিনক্ষণ ঠিক হলেই সেতুটি উদ্বোধন করা হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে