নির্বাচনের আগেই শুরু হচ্ছে ৮০ সেতুর নির্মাণকাজ

0
414

নির্বাচন সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায় দুই হাজার সেতু নির্মাণের সুপারিশ এসেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি)। জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে সুপারিশ হিসেবে আসা এসব সেতু কতটুকু জনগুরুত্বপূর্ণ তা সমীক্ষা করে দেখছে সংস্থাটি। সুপারিশকৃত সেতুগুলোর মধ্যে ৮০টির নির্মাণকাজ আগামী নির্বাচনের আগেই শুরু হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

জানা গেছে, জনগুরুত্ব বিবেচনায় নির্মিতব্য এসব সেতুর প্রতিটিই হবে ডাবল লেনের। এরই মধ্যে ১৫টি সেতুর দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়া শুরু করেছে এলজিইডি। সেতুগুলো হলো— টাঙ্গাইলের গোপালপুরে চাককান্দি খালের ওপর সেতু, ঝিনাইদহ সদরের ঝাপোই নদীর ওপর সেতু, নড়াইলের লোহাগড়ায় নবগঙ্গা নদীর ওপর সেতু, রাজবাড়ী সদর ও কালুখালীতে দুটি সেতু, গাইবান্ধার ফুলছড়িতে তিনটি সেতু, গোপালগঞ্জ সদর, ঢাকার ধামরাই ও তেজগাঁও সার্কেল, গাজীপুরের কাপাশিয়া, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা, নাটোরের বাগাতিপাড়া ও সিরাজগঞ্জের কামারখান্দায় একটি করে সেতু।

জানা গেছে, উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়কে দীর্ঘ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় আন্তর্জাতিকমান বজায় রেখে ডাবল লেনের ৮০টি সেতু নির্মাণ করা হবে, যা শেষ হবে ২০২০ সালের মধ্যে।
এ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক আবদুস সালাম মণ্ডল বলেন, এইচএল ৯৩ লোডিং ধরে আমরা সেতুগুলো নির্মাণ করছি, যা আন্তর্জাতিকমানের। সেতুগুলোর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে ওইসব অঞ্চলের আর্থসামাজিক অবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে। এছাড়া যাবতীয় সমীক্ষা সম্পন্ন করেই আমরা সেতু নির্মাণ করছি, যাতে পরবর্তীতে নদীর স্বাভাবিক গতিপথে কোনো ধরনের সমস্যা না হয়।

এলজিইডি বলছে, গ্রামীণ জনপদে সেতু নির্মাণে জনগুরুত্বের বিষয়টি প্রাধান্য দেয়ার নিয়ম রয়েছে। সাধারণত হাটবাজার, স্কুল-কলেজ ও হাসপাতালে যাওয়ার পথে সেতু নির্মাণে সবচেয়ে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। এর বাইরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সুপারিশেও সেতু নির্মাণ করে সংস্থাটি।

এলজিইডির মূল্যায়ন অনুযায়ী, ২ ও ৩ কোড নম্বরের উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়কগুলো সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ হাটবাজার, স্কুল-কলেজসহ গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ রয়েছে এসব সড়কের। তাই এ ধরনের সড়কের সঙ্গে সংযোগ রাখে এমন সেতুই নির্মাণ করতে চায় সংস্থাটি। এছাড়া ৪ ও ৫ কোড নম্বরের সড়কগুলো বিবেচনা করা হয় গ্রামীণ সড়ক হিসেবে। হাটবাজারের সঙ্গে সংযোগ কম থাকায় এ ধরনের সড়কের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে সেতু নির্মাণকে কম গুরুত্ব দেয় এলজিইডি।
প্রসঙ্গত, শুধু নতুন সেতু নির্মাণ নয়, বরং পুরনোগুলোর ব্যবস্থাপনায়ও আগের চেয়ে অনেক সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এলজিইডি। মান বজায় রাখতে সম্প্রতি সেতু ব্যবস্থাপনায় স্বয়ংক্রিয় অ্যাপসনির্ভর পদ্ধতিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। নতুন পদ্ধতিতে অ্যাপসের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এলজিইডির আওতাধীন সেতুগুলোর যাবতীয় তথ্য কেন্দ্রীয় সার্ভারে সংরক্ষণ করা হবে। সেতু কবে, কোথায়, কত টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে— সে-সংক্রান্ত তথ্যও সংরক্ষণ করা হবে এতে। পাশাপাশি প্রতি বছর সরেজমিন পরিদর্শনের ভিত্তিতে সেতুর তথ্যও হালনাগাদ করা হবে। এছাড়া নতুন অ্যাপসনির্ভর পদ্ধতিতে কাজ চালানোর জন্য একটি ব্রিজ ইউনিট গঠনেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। প্রাথমিক পর্যায়ে এলজিইডির ডিজাইন ও ব্রিজ ইউনিট একসঙ্গে কার্যক্রম চালালেও পরবর্তীতে তা পৃথক হবে। অ্যাপসের মাধ্যমে এলজিইডির আওতাধীন সব সেতুর শুরু থেকে সর্বশেষ তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। আলাদা করা হবে জীর্ণ ও আয়ুষ্কাল পেরোনো সেতুগুলো। দ্রুত সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ প্রয়োজন, এমনসব সেতুর তালিকাও তৈরি করবে এলজিইডি। পাশাপাশি ঠিক কোন কোন সমস্যার কারণে সেতু ব্যবহার করা যাচ্ছে না, তা চিহ্নিত করে কেন্দ্রীয় সার্ভারে সংরক্ষণ করবে এলজিইডি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে