ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার ‘চলমান জাদুঘরের’ উদ্বোধন

0
1235

শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, (নোঙরনিউজ) : সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৮ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে সংঘটিত জেনোসাইড এর পরিচিতিমূলক “চলমান জাদুঘর : ৭১ এর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জেনোসাইড” অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান নূর, এমপি।

শুক্রবার সকাল ১০:৩০ মিনিট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলাভবনের সামনে বটতলায় ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, এটি বাংলাদেশের প্রথমা চলমান জাদুঘর। আশাকরি আগামীতেও এ চিন্তার বিস্তার লাভ করবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের এবং দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীরা এই বিষয়ে সঠিক ইতিহাস আর ভালো ভাবে জানতে পারবে।

আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ১৯৭১ সালে আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জহুরুল হক হলের এক জন ছাত্র ছিলাম। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় নীলক্ষেত এলাকায় একটি বিশাল বস্তি ছিলো। আমাদের সাথে সে দিন সেই নীলক্ষেতের বস্তিবাসীরাও আমাদের সাথে মিছিলে আসতো নিয়মিত। জানতে চাইলে বলতো, আমরা শেখ সাবের কথায় যুদ্ধে অংশগ্রহণ কিরছি।

তিনি বলেন সে দিন পাকিস্তানী বাহিনীরা সেই নীলক্ষেত বস্তিবাসীর বস্তি জ্বালিয়ে দিয়ে ছিলো তার কারণ ছিল মুক্তিযুদ্ধে তাদের অংশগ্রহণ। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বটগাছের জায়গায় একটি পুরাতন বটগাছ ছিলো। আমরা যখন ছাত্রদের বলতাম যে, বটতলা চলে আসো তখন সকল ছাত্র ছাত্রী চলে আসতো। তাই পাকিস্তানীরা সেই বটগাছ কেটে দিলো যেনো বটগাছটার নিচে আর আন্দোলন করতে না পারি। এভাবে মিধুর ক্যান্টিনের মধূ দা ছিলেন আমাদের অভিভাবকের মতো। মিছিলের সময় চা খেতে দেখলে বলতেন, মিছিলে যাও। সেই মধূ দা কেও পাকবাহিনী হত্যা করলো।

আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘যে সকল ইতিহাস হারিয়ে গেছে এবং ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সেগুলোকে আমাদের উদ্ধার করতে হবে। এটি ইতিহাসবিদ, সচেতন মানুষ, এবং যারা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কাজ করেন তাদের জন্যে একটি বড় কাজ।’

মন্ত্রী বলেন, ‘যে উদ্যোগটি গ্রহণ করা হয়েছে, আমি মনে করি তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং বাঙালি জাতির আত্মত্যাগের ইতিহাস এতো ব্যাপক যে, শুধু একটি গ্রন্থে তা ধরে রাখা অসম্ভব। নতুন এই চলমান জাদুঘরের মাধ্যমে আমরা আবার নতুন করে ইতিহাসকে আবিষ্কার করবো। সেই সঙ্গে আমরা আবিষ্কার করবো মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষক এবং কর্মচারীদের অবদান।’
তাই আজকে যে চলমান জাদুঘরের যাত্র শুরু হলো তা আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়তে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে বিশাল ভুমিকা পালন করবে।

সভাপতির বক্তব্য উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে।

তাই আজ যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, এটা অসাধারণ উদ্যোগ। আশাকরি এই উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধের আসল ইতিহাস জানবে। অনুষ্ঠান উদ্বোধন শেষে মধুর ক্যানটিন গিয়ে সমাপ্তি হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে