


১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে মিত্রবাহিনীর বোমায় হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ১২ নম্বর স্প্যানটি ভেঙে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ জানান, পাকিস্তানি সেনাদের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করতে হার্ডিঞ্জ সেতুর ওপর পাকিস্তানি সেনাদের লক্ষ্য করে ওই দিন বোমাটি নিক্ষেপ করা হয়। সেই বোমার আঘাতে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেতুর ১২ নম্বর স্প্যানটি প্রায় ৪০ ফুট অংশ দ্বিখণ্ডিত হয়ে নদীতে পড়ে যায়। এছাড়া ১৫ নম্বর স্প্যানের একটি ক্রস গার্ডার ও ২টি স্ট্রিঞ্জার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ৯ নম্বর স্প্যানটির নিচের অংশ দুমড়ে যায় এবং ২ নম্বর সেতুস্তম্ভের ওপরের ইস্পাতের ট্রাসেলটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হার্ডিঞ্জ সেতুর ওপর দিয়ে একক ব্রডগেজ লাইন বসিয়ে সীমিত গতিতে ট্রেন যোগাযোগ পুনঃস্থাপিত হয় ১৯৭২ সালের ১২ অক্টোবরে। ধ্বংসপ্রাপ্ত বোমার খোলসটি এখনও পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজারের কার্যালয়ের সামনে কালের সাক্ষী হিসেবে সংরক্ষণ করে রাখা হয়। এখনও বিভিন্ন এলাকা থেকে বোমার খোলসটি দেখতে পাকশী আসেন অসংখ্য দর্শনার্থী।
মুক্তিযুদ্ধকালীন কোম্পানি কমান্ডার অ্যাডভোকেট সদরুল হক সুধা জানান, ১৪ ডিসেম্বর দুপুর ১২টার দিকে পাকশীর আকাশ দিয়ে ভারতীয় ৫টি যুদ্ধ বিমান হার্ডিঞ্জ সেতুর ওপর দিয়ে চক্কর দিতে থাকে। এরপর শুরু হয় বিমান থেকে বোমা বর্ষণ। ৪-৫টি বোমা হার্ডিঞ্জ ব্রিজে নিক্ষেপ করা হয়। বোমার প্রচণ্ড আঘাতে এ সময় ব্রিজের ১২নং স্প্যানটি ভেঙে নদীতে পড়ে যায় এবং আরেকটি স্প্যান ব্যাপক ক্ষতি হয়। দলবদ্ধ অ্যাম্বুশ ভেঙে পাকিস্তানি সেনারা পাকশী থেকে পালিয়ে যেতে শুরু করে। দৈনিক সমকাল