ধর্ম অবমাননা করলে যাবজ্জীবন শাস্তির আইন করছে পাঞ্জাব সরকার

0
37
পাঞ্জাবে অমৃতসরের স্বর্ণমন্দির। ছবি: রয়টার্স

ধর্ম অবমাননা করলে যাবজ্জীবন শাস্তি দিয়ে নতুন আইন অনুমোদনে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেছে পাঞ্জাব সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এ আবেদন জানিয়েছে উপমুখ্যমন্ত্রী সুখজিন্দর সিং রণধাওয়া।

ভয়েস অব আমেরিকার খবরে বলা হয়, গত শনি ও রোববার পাঞ্জাবে ধর্মের অবমাননার দায়ে দু’জনকে পিটিয়ে মেরেছে জনতা। এরপরে ধর্মনিন্দা সংক্রান্ত রাজ্যের দু’টি বিলে রাষ্ট্রপতির দ্রুত অনুমোদনের আবেদন করা হয়।

২০১৮ সালে পাঞ্জাব বিধানসভায় কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিওর (পাঞ্জাব অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল এবং দি ইন্ডিয়ান পেনাল কোড (পাঞ্জাব অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল পাশ হয়। রাজ্যপাল ওই দুই বিলে সম্মতি দিয়েছেন। বিল দু’টি এখন রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

ওই দু’টি আইনে বলা হয়েছে, কেউ যদি ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার জন্য গুরু গ্রন্থ সাহিব, ভগবৎ গীতা, কুরআন অথবা বাইবেলের অবমাননা করে, তাহলে তাকে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পর্যন্ত দেওয়া হতে পারে।

সোমবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখে রণধাওয়া বলেন, ধর্মগ্রন্থের অবমাননা পাঞ্জাবে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। শ্রী গুরু গ্রন্থ সাহিবকে শিখরা জীবন্ত গুরু মনে করেন। তার সঙ্গে শিখদের মর্যাদা জড়িত।

রণধাওয়া জানান, বর্তমান আইন অনুযায়ী কেউ ধর্মের অবমাননা করলে তিন বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। কিতু বর্তমান পরিস্থিতিতে ওই আইন যথেষ্ট নয়।

পাঞ্জাবের উপমুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, পাঞ্জাব সীমান্তবর্তী রাজ্য। এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য ধর্মের অবমাননাকারীদের কঠোর শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।

পরে রণধাওয়া লিখেছেন, আমি আবেদন জানাচ্ছি, পাঞ্জাব বিধানসভায় পাশ হওয়া দু’টি বিলে রাষ্ট্রপতি সম্মতি দিন।

প্রসঙ্গত, পাঞ্জাবে অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে উত্তেজিত জনতা।

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি— শনিবার সন্ধ্যায় প্রার্থনা চলাকালীন আচমকাই এক ব্যক্তি দেয়াল টপকে শিখ সম্প্রদায়ের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ ‘গ্রন্থ সাহেব’-এর সামনে রাখা তলোয়ার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।

সেই সময় কাছাকাছি থাকা ব্যক্তিরা তাকে ধরে বের করে দেন। বাইরে উত্তেজিত জনতা তাকে গণপিটুনি দেয়। তাতেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয় বলে পুলিশ জানায়।

৩৭ বছর আগে ১৯৮৪ সালের ১ থেকে ১০ জুন পর্যন্ত ‘অপারেশন ব্লু স্টার’ চালানো হয়েছিল এই স্বর্ণমন্দিরেই।

তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নির্দেশে স্বর্ণমন্দির চত্বরে আশ্রয় নেওয়া খালিস্তানি আন্দোলনের প্রধান মাথা জার্নেল সিংহ ভিন্দ্রানওয়ালে এবং তার একাধিক সহযোগীকে ধরতে সেখানে অভিযান চালায় ভারতীয় সেনা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে