টিআইবি’র অনেক রিপোর্টই একপেশে ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত -তথ্যমন্ত্রী

0
254

টিআইবি’র অনেক রিপোর্টই একপেশে ও সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। সোমবার (১৫ জুন) দুপুরে রাজধানীতে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে করেনা মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপগুলোর বিষয়ে টিআইবি’র সমালোচনার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি একথা বলেন।

‘টিআইবির কাজ শুধু দোষ খুঁজে বেড়ানো ও গত সাড়ে ১১ বছর আমাদের দেশ পরিচলনার কোনো কাজে টিআইবি সরকারের প্রশংসা করতে পারেনা’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এই টিআইবি বড় গলায় বলেছিল পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে। যখন কানাডার আদালতেও বিশ্বব্যাংক হেরে গেল, টিআইবি’র তখন জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া প্রয়োজন ছিল। এমন বহুক্ষেত্রে টিআইবি প্রমাণ করেছে, তারা প্রকৃতপক্ষে সঠিক গবেষণাপ্রসূত কোনো রিপোর্ট পেশ করে না। তাদের সবগুলো না হলেও অনেক রিপোর্টই একপেশে এবং সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’

ড. হাছান বলেন, ‘তাদেরকে অনুরোধ জানাবো যেন তারা তাদের প্রধান কার্যালয় জার্মানী এবং ইউরোপের অন্যান্য যেসমস্ত দেশ থেকে অর্থ পায়, সেখানকার পরিস্থিতির সাথে বাংলাদেশের তুলনা করে। তাহলেই সেখানকার তুলনায় বাংলাদেশের পরিস্থিতি তারা বুঝতে পারবে।’ এসময় সাংবাদিকরা বিএনপি’র সাম্প্রতিক বিরূপ মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই মহামারির মধ্যেও বিএনপি’র নেতাদের ভাষা প্রচন্ড রাজনৈতিক বিদ্বেষপূর্ণ। আমরা আশা করেছিলাম, তারা অন্যান্য দেশ এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কাছ থেকেও শিখবে। ভারতে বিরোধীদলীয় নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর প্রথমেই চিঠি লিখে সরকারকে জানিয়েছেন যে ভারত সরকার যে পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করছে, সেগুলো তারা সমর্থন করেন এবং এই দুর্যোগে তারা সরকারের পাশে আছেন।

বাংলাদেশে বিএনপি সেটি করতে ব্যর্থ হয়েছে।’ মন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মহামারি মোকাবিলা -এটি একটি যুদ্ধ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বয়স ৭৪ বছর, তিনি এক মুহূর্তও বসে নেই। তিনি প্রতিদিন কাজ করছেন, জেলা ও বিভাগীয় সদরের সাথে কথা বলেছেন। দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিচ্ছেন, সংসদ অধিবেশনে প্রতিদিন অংশগ্রহণ করছেন। আমরা প্রত্যেকেই জানি, যে কোনো মুহুর্তে আক্রান্ত হতে পারি, এরপরও আমরা বসে নেই। দাপ্তরিক কাজ যেমন করছি, রাজনৈতিক কাজও করছি, একইসাথে নিজ নির্বাচনী এলাকা থেকে শুরু করে নিজ জেলার কাজগুলোও যতটা সম্ভব তদারকির চেষ্টা করছি।’

‘প্রয়াত শ্রদ্ধেয় নেতা মোহাম্মদ নাসিম এবং ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ দু’জনই মানুষের মাঝে কাজ করতে গিয়েই করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের দলের যে সমস্ত নেতা ও সংসদ সদস্য আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আছেন কিম্বা চিকিৎসা নিচ্ছেন, তারাও মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়েই আক্রান্ত হয়েছে। এগুলো প্রমাণ করে, আমাদের দলের কেন্দ্রীয় এবং মাঠ পর্যায়ের নেতা ও সংসদ সদস্যরা জনগণের পাশে থাকতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছে। এই যুদ্ধের মধ্যেই নিজেকে যতটুকু সম্ভব সুরক্ষায় রেখে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে।’

সাধারণ মানুষের জন্য চিকিৎসা নেই -বিএনপি’র এই অভিযোগ খন্ডন করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের প্রাণান্তকর চেষ্টায় এখনো বাংলাদেশের পরিস্থিতি বিশ্বের উন্নত ও প্রতিবেশি দেশগুলোর তুলনায়ও ভালো রয়েছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আরো উন্নতির জন্য সরকার বাজেট বরাদ্দবৃদ্ধিসহ নানামুখী ব্যবস্থা নিয়েছে। হাজার হাজার মানুষ যে সুস্থ হলো, তারা সেগুলো দেখেন না। হাজার মানুষ যে হাসপাতালে আছে এবং সেখানে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে চোখ থাকতেও যারা অন্ধের মতো সেগুলো দেখেনা, তাদের চোখে তো আলো দেয়া সম্ভবপর নয়।’ ‘এই সময় বিষোদগারের রাজনীতি পরিহার হোক -এটিই বিএনপি’র কাছে আমার অনুরোধ’ জানিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘আপনাদের গতানুগতিক বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য এগুলো পরিহার করুন, জনগণের পাশে থাকুন।

আপনারা লোক দেখানো কয়েকটা ফটোসেশন করবেন আর নিজেকে সুরক্ষিত রেখে প্রেস ব্রিফিং করে সেখানে বিষোদগার করবেন, এই সময় এটি সমীচীন নয়, জনগণ এটি কামনা করে না। তাই আসুন একসাথে কাজ করি।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে