আনন্দ নেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরমানন্দপুর গ্রামে

0
383

গত কয়েক মাস ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুরে গ্রাম্য বিরোধকে কেন্দ্র করে চলছে অস্থিরতা। দফায় দফায় সংঘর্ষ, লুটপাট, ভাঙচুর হামলার ঘটনাও ঘটছে। এতে অনেকটাই অনিরাপদ হয়ে উঠেছে সেখানকার পরিবেশ। তিন দিন আগেও আইয়ুব খানের লোকজন নূর আলীর বাড়ির মহিউদ্দিনকে মারধর করে গুরুতর আহত করে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন।

মোঃ রাসেল আহম্মেদ, নোঙর ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, ছয় মাস আগে ওই গ্রামে খেলাকে কেন্দ্র করে ইউসুফের বাড়ি ও নূর আলীর বাড়ির লোকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর থেকে ইউসুফের সঙ্গে আরো চার গোষ্ঠীর লাঠিয়াল বাহিনী যুক্ত হয়ে নূর আলীর বাড়ির লোকজনের ওপর দফায় দফায় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এসব ঘটনায় আহত হন নূর আলীর বাড়ির অনেকেই। কথা হয় নূর আলীর বাড়ির বৃদ্ধ রস্তম আলীর (৮০) সঙ্গে।

তিনি জানান, তাদের সঙ্গে কথা বলার আগেই ইউসুফের লোকজন মারধর শুরু করে। তারা পুলিশকেও মারধর করেছে। এভাবে চলতে থাকলে আমরা কীভাবে জান বাঁচাবো। নূর আলী বাড়ির আসমত আলী বলেন, করোনা সংকটে এমনিতেই অসুবিধায় আছি। একদিকে তারা চার গোষ্ঠী একত্র হয়ে আমাদের ওপর একের পর এক জুলুম করে যাচ্ছে। তারা আবার লিস্ট করছে ১০/১৫ জন করে আমাদের লোকজনকে মারধর করবে। করোনার কারণে এমনিতে আমাদের সংসারে টানাটানি চলছে।

আমাদের বাড়ির ২৪৪টি ঘর অনেকটা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। যতই ঝগড়া থেকে আমরা এড়িয়ে যাচ্ছি ততটাই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। সরকারের কাছে আমাদের আবেদন আমরা যেন নিরাপদভাবে বসবাস করতে পারি। এই গ্রামের বাসিন্দা সুলতানা বেগম বলেন, আমি নিরীহ মানুষ। আমার কোনো পক্ষপাতিত্ব নেই। ঝগড়ার সময় বেশ কয়েকবার আমার দোকান লুটপাট ও হামলার শিকার হয়েছে। পুনরায় আবার ব্যাংক ঋণের সহযোগিতায় দোকানে মালামাল তুললেও ঝগড়া লেগে আবারও লুট হয়ে যায়। করোনার মধ্যে – ছেলে-মেয়ে নিয়ে অসহায় অবস্থায় আছি। এই দোকানই আমার সংসার চালানোর একমাত্র আয়ের উৎস। নূর আলীর বাড়ির দুই গৃহবধূ সুর্বণা ও বুকুলা বেগম বলেন, চার গোষ্ঠীর লোকজন অনর্থক আমাদের বাড়িঘরে হামলা করছে। বাড়ি থেকে বের হলেই তারা ঝাঁপিয়ে পড়ে। ছয় মাস ধরে অত্যাচার করতাছে।

এবিষয়ে পাকশিমুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা উপজেলা চেয়ারম্যানকে নিয়ে কয়েকবার মিমাংসা করার চেষ্টা করেছি। তারপরও পুনরায় আবার তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হয়। যেহেতু এ ঘটনায় পুলিশ এ্যাস্টল মামলা হয়েছে সে হিসেবে বিষয়টি আমাদের নাগালের বাইরে। সংর্ঘষের বিষয়ে জানতে চাইলে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএমএম নাজমুল আহমেদ বলেন, গ্রামে শান্তি রক্ষার জন্য পুলিশ অভিযান চালালেও দাঙ্গাবাজরা পুলিশের ওপরও হামলা চালায়। এ ঘটনায় আমরা পুলিশ এ্যাস্টল মামলা করেছি। মামলাটি তদন্তাধীন আছে। এছাড়া উভয় পক্ষের করা মামলাগুলোও তদন্ত করা হচ্ছে। যারা প্রকৃত অপরাধী তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে