পরিস্থিতি খারাপ হলে যে কোনো সময় ‘কঠোর লকডাউন’ : প্রধানমন্ত্রী

0
380

গতকাল রোববার ৩১ মে, খুলে যাচ্ছে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস, গণপরিবহনসহ দোকানপাটও খুলছে। তবে বাসের চাকা ঘুরবে একদিন পর। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছে না এখন। কিন্তু এরমধ্যে এ সিদ্ধান্তে অনেকেই নাখোশ। তবে পরীক্ষামূলক এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যদি দেখা যায় যে, করোনা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে, তাহলে আবার সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে এবার ছুটি নয়, দেওয়া হবে কঠোর লকডাউন।

গত শনিবার (৩০মে) প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারের দয়িত্বশীল পযায়ে থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা যায়, এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্টভাবে দশ দফা নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, আমরা সবকিছু খুলে দিয়েছি, তার মানে এই না যে সবকিছু এইভাবে চলতে থাকবে। যদি পরিস্থিতি খারাপ হয়, যদি জনস্বাস্থ্যের জন্য যদি নতুন করে হুমকি সৃষ্টি হয় তাহলে অবশ্যই আবার লকডাউন দেওয়া হবে এবং সেই ব্যবস্থা সরকার যেকোন সময় নিতে পারে। তবে প্রধানমন্ত্রী মনে করেন যে, আগে যে সাধারণ ছুটি দেওয়া হয়েছিল, সেই ছুটিতে মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানেনি এবং যেভাবে সামাজিক দূরত্ব বজার রাখার দরকার ছিল সে ব্যাপারে সচেতনতার যথেষ্ট অভাব ছিল।

প্রধানমন্ত্রী এই বৈঠকে দশ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন বলে বৈঠকসূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে। সবকিছু খুলে দেওয়ার পর এই দশ দফা নির্দেশনা প্রতিপালনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

যে নির্দেশনাগুলো প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন তার মধ্যে রয়েছে- ১. স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে, ২. সভা-সমাবেশ, জমায়েত হবে না, ৩. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে, ৪. অযথা পরীক্ষা নয়, ৫. হাসপাতালের উপর চাপ কমাতে হবে, ৬. সচেতনতা বাড়াতে হবে, ৭. বেসরকারি হাসপাতালের ব্যবসা বন্ধ করতে হবে ৮. গণপরিবহন মনিটরিং করতে হবে ৯. গবেষণা বাড়াতে হবে ১০. নিয়মিত পরিস্থিতি মনিটরিং করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা বের হবে তাদেরকে অবশ্যই মাস্ক-গ্লোভস পরতে হবে এবং অফিস-আদালতগুলোতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা রাখতে হবে। সাবান এবং পানি রাখতে হবে। এছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে যে স্বাস্থ্যবিধিগুলো দিয়েছে সেগুলো যেন প্রতিপালিত হয়, তা নজরদারির মধ্যে আনতে হবে। এখনই কোন ধরনের সভা-সমাবেশ, জমায়েত, পূণর্মিলনী বা অনেক মানুষ জমায়েত হতে পারে এ ধরনের কোনো সামাজিক অনুষ্ঠান করা যাবে না। আপাতত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খোলা হবে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

হাসপাতালের উপর চাপ কমাতে হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মৃদু উপসর্গ যাদের আছে তারা যেন হাসপাতালে ভর্তি না হন, এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে অধিকাংশ রোগী মৃদু উপসর্গের চিকিৎসা বাড়িতেই করছে। কাজেই জটিল রোগী ছাড়া হাসপাতালে যেন কেউ ভর্তি না হয় সে ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। করোনা চিকিৎসা বিনামূল্যে দিচ্ছে সরকার এবং এজন্য বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে অর্থ দেওয়া হচ্ছে। কাজেই বেসরকারি হাসপাতালগুলো যেন করোনা চিকিৎসার নামে ব্যবসা না করে সেটি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

গণপরিবহনগুলোর ব্যাপারে যে নির্দেশনা দিয়েছে যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ইত্যাদি নির্দেশনাগুলো যেন প্রতিপালিত হয় সে ব্যাপারে মনিটরিং করতে হবে।

উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাসের কারণে টানা ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি শেষে ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত চলাচল সীমিত করে গত ২৮ মে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে