হোম কোয়ারান্টিনে মধ্যপ্রাচ্যে বাড়ছে ‍গৃহনির্যাতন!

0
299

কারফিউ জারি বা লকডাউন করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো কোভিড-১৯ মহামারী আটকানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে৷ কিন্তু হোম কোয়ারান্টিনের এই সময়ে দেশগুলোতে ‍গৃহনির্যাতন কয়েকগুণ বেড়ে গেছে৷

মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোতে প্রতিনিয়ত নারীদের নির্যাতনের শিকার হতে হয়৷ বিশেষ করে ইয়েমেন, মরক্কো ও মিশরের একচতুর্থাংশ বিবাহিত নারী স্বামীর দ্বারা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন৷

গত সপ্তাহে তিউনিসিয়ার নারী বিষয়ক মন্ত্রী আসমা শিরি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন, তার দেশে হোম কোয়ারান্টিনের সময় গৃহনির্যাতন আশঙ্কাজনক ‍হারে বেড়ে গেছে৷ করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে গত ‍মাসের মাঝামাঝিতে কারফিউ জারি করে তিউনিসিয়া সরকার৷ তারপর থেকে গৃহনির্যাতন পাঁচ গুণ বেড়েছে৷

অথচ মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার অর্ধেকের বেশি দেশে গৃহনির্যাতন রোধে আইন কাছে৷ বাস্তবে  এর কর্যকারিতা অবশ্য দেখা যায় না বললেই চলে৷

বিবাহিত নারী

বিয়ের পর থেকে স্বামীর হাতে প্রতিনিয়ত মার খান লায়লা (ছদ্মনাম)৷

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ নারী বলেন, ‘‘এটা আমার জীবনের অংশ হয়ে গেছে৷ ‍অনেকটা শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার মতো৷ আমার স্বামী আমাকে যখন মারতে শুরু করেছিল তখন আমি বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিহোম৷ পরে লোকলজ্জার ভয়ে নিজেই স্বামীর বাড়িতে ফিরে আসি৷’’

শিশুরাও ঝুঁকিতে

লায়লার স্বামী সন্তানদেরও প্রচণ্ড মারধর করেন৷ ‍বাবার বাড়ি থেকে ফেরার পর লায়লা প্রায়ই তাঁর সাত মেয়ে ও এক ছেলের শরীরে কালশিটে দেখতে পান৷

স্বামী কাজের কারণে বাইরে থাকলেই কেবল বাড়িতে তারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন বলে জানান লায়লা৷ কিন্তু এখন সরকারের কড়াকড়ির কারণে তার স্বামী কাজের জন্য বাইরে যেতে পারছেন না৷ এর ফলে লায়লা ও তার সন্তানদের উপর নির্যাতন বেড়ে গেছে৷ 

লায়লা একা নন

আরব দেশগুলোর বেশিরভাগ নারীকে এভাবে গৃহনির্যাতনের শিকার হতে হয়৷ নিজ দেশ থেকে তুরস্কে পালিয়ে আসা আয়শার শরণার্থী জীবনেও এর ব্যতিক্রম হয়নি৷ তার স্বামী প্রতিদিন তাকে এবং তার সন্তানদের মারধর করেন৷

ডয়চে ভেলেকে আয়শা (ছদ্ম নাম) বলেন, ‘‘আমি সহবাস করতে রাজি না হওয়ায় একবার তিনি আমাকে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন৷

‘‘করোনা ভাইরাসের কারণে তুরস্কে কারফিউ জারি হলে তিনি তো কাজে যেতে পারবেন না৷ তখন হয়তো তিনি আমাকে আরো মারবেন৷”

গৃহকর্মের চাপও বেড়েছে

সাধারণত নারীরাই ঘরের কাজ সামলান৷ হোম কোয়ারান্টিনের এই সময়ে তাদের উপর কাজের চাপ আরো বেড়েছে৷

লেবাননের সমাজকর্মী রানিয়া সুলেইমান বলেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে পরিবারের সব লোক সারাদিন বাড়িতে থাকছেন৷ তাদের প্রয়োজন মেটাতে নারীরা বাড়তি চাপ নিতে বাধ্য হচ্ছেন৷ স্বামীরা ঘরে থাকায় স্ত্রীকে সঙ্গে সঙ্গে তাদের চাহিদা মেটাতে হচ্ছে, না পারলে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে৷” ডয়চে ভেলে


একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে