ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের পুকুর চুরির অভিযোগ!

0
844
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের পাওয়ার হাউজ রোড সংলগ্ন ও জেলা পরিষদের পিছনে নিউ মৌড়াইল এলাকার একমাত্র পুকুর দখল। ছবি : শিপন কর্মকার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের পাওয়ার হাউজ রোড সংলগ্ন ও জেলা পরিষদের পিছনে নিউ মৌড়াইল এলাকার একমাত্র পুকুরটি অবৈধভাবে ভরাটের মাধ্যমে চুরি হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

গত ১১ মার্চ ২০২০ বুধবার জেলা প্রশাসক, পৌরসভা ও পরিবেশ অধিদপ্তরের বরাবর নিউ মৌড়াইল মহল্লাবাসীর পক্ষে হাজী সহিদ মোল্লার ছেলে মোল্লা মো. শামীম এ অভিযোগ করেন।

তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন এলাকায় থাকা শত বছরের একমাত্র পুুকুরটি ভরাট হয়ে গেলে অত্র এলাকায় আর কোন পুকুর থাকবে না।এখন শুস্ক মৌসুমে এই এলাকায় অনাকাঙ্খিত অগ্নিকান্ড ঘটলে অগ্নি নির্বাপনে জন্য এই পুকুরটি আমাদের একমাত্র ভরসা যা ভরাট করার মাধ্যমে চুরি যাচ্ছে!

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের পাওয়ার হাউজ রোড সংলগ্ন ও জেলা পরিষদের পিছনে নিউ মৌড়াইল এলাকার একমাত্র পুকুর। ছবি : শিপন কর্মকার

মো. শামীম আরো বলেন, এক সময় এ পুকুরে আমরা গোসল করেছি, কাপড় ধুয়েছি, গৃহস্থালীর সকল কাজ করেছি। বর্তমানে পরিবেশ অধিদপ্তর অথবা পৌরসভার অনুমতি ছাড়াই মাটি ফেলে দিনে রাতে পুকুরটি ভরাট করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী মৃত হাজী জুরু মিয়ার ছেলে এনাম ভূইয়া। অবৈধভাবে পুকুর দখল করে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করা প্রসঙ্গে এলাকাবাসী এ বিষয়ে পুকুর ভরাটকারী এনাম ভূইয়াকে বাঁধা দিতে গেলে তিনি বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।

তিনি আরো বলেন, অগ্নি নির্বাপণের জন্য এলাকাবাসীর একমাত্র ভরসা এই শত বছরের পুুকুরটিও আজ হারাতে হচ্ছে! নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিউ মৌড়াইল একজন এলাকাবাসী বলেন যে কোন মূল্যে আমরা দখল হয়ে যাওয়া পুকুরটি ফিরে পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ আশা করছি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের পাওয়ার হাউজ রোড সংলগ্ন ও জেলা পরিষদের পিছনে নিউ মৌড়াইল এলাকার একমাত্র পুকুর। ছবি : শিপন কর্মকার

নোঙর নিউজের প্রতিবেদক সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে পুকুর দখলকারী এনাম ভূইয়ার ভাতিজা সজীব ভূইয়া জানান, আমরা যে জায়গাটি মাটি ফেলে ভরাট করছি তা নিতান্তই আমাদের নিজস্ব জায়গা। এ জায়গা পুকুর অংশের নয়। আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়েই জায়গাটি ভরাট করছি। ছাড়পত্র কোথায় জানতে চাইলে তিনি নোঙর নিউজ প্রতিবেদককে ছাড়পত্রটি দেখাতে আপত্তি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে নদী নিরাপত্তার সামাজিক সংগঠন নোঙর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির সভাপতি শামীম আহমেদ বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর এক সময় শত পুকুরের শহর ছিল। ভূমিদস্যুদের কারণে শহরে আজ পুকুর, শহরের টাউন খাল এবং জলাশয় শূণ্য হয়ে পড়ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে এক সময় শহরে আর কোন পানির ব্যবস্থা থাকবে না। আমরা তাই নোঙর’র পক্ষ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নদ-নদী, খাল-বিল, জলাশয়, হাওরবাওরসহ দখলকৃত সকল নদ-নদী, খাল, পুকুর ও জলাশয় রক্ষা করার সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যহত রেখেছি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের পাওয়ার হাউজ রোড সংলগ্ন ও জেলা পরিষদের পিছনে নিউ মৌড়াইল এলাকার একমাত্র পুকুর। ছবি : শিপন কর্মকার

এ পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি। একই সাথে পরিবেশ অধিপ্তর ও পৌর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক দখলকৃত সকল নদ-নদী, খালসহ পুকুরগুলো দখলমুক্ত করে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করে দেয়ার জোরালো আহবান জানাচ্ছি।

এ ছাড়াও সরেজমিন পরিদর্শনে আরো উস্থিত ছিলেন নোঙর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার নির্বাহী সদস্য সোহেল আহাদ, তথ্য ও প্রচার সম্পাদক খায়রুল কবির এবং অর্থ সম্পাদক শিপন কর্মকার।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে