সূর্যমুখী ফসল চাষে উৎসাহিত হচ্ছে পীরগঞ্জের কৃষক

0
379

জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা সুর্যমুখী ফসল চাষে উৎসাহিত হচ্ছে। বাজারে ব্যাপক চাহিদা, উচ্চহারে লাভজনক এবং ৯০ থেকে ১১০ দিনের মধ্যে উত্তোলন উপযোগী ফসল হওয়ায় দিনদিনই এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে।


পীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাদেকুজ্জামান সরকার বাসসকে জানান, কৃষি বান্ধব সরকারের প্রণোদনা কর্মসূচি এবং কৃষক উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে এ বছর পীরগঞ্জের ১৫টি ইউনিয়নে প্রায় ৫০ একর জমিতে ১৫০ জন কৃষক সূর্যমুখী ফসলের চাষ করেছে। এর আগে এই উপজেলায় সূর্যমুখী ফসলের চাষ হয়নি। এ ধরণের কর্মসূচি অব্যাহত রাখার মাধ্যমে একদিকে যেমন উৎকৃষ্ট মানের ভোজ্যতেল উৎপাদন করা সম্ভব হবে অন্যদিকে কৃষিকে একটি লাভজনক পেশায় নিয়ে যাওয়া সম্ভবপর হবে।


সূর্যমুখীর তেল হৃদরোগীদের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়াও সূর্যমুখীর খৈল গরু ও মহিষের উৎকৃষ্টমানের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর বীজ ছাড়ানোর পর মাথাগুলো গরুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়। গাছ ও পুষ্পস্তবক জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়।


পৌরসভা এলাকার তুলারাম মজিদপুর গ্রামের ওবায়দুর রহমান, প্রজাপাড়া গ্রামের মমতাজ উদ্দিন ও ময়েন উদ্দিন, ওসমানপুর গ্রামের আব্দুল করিম, হামেদ মিয়া ও কাশেম মিয়া, রায়পুর ইউনিয়নের কাঞ্চনগাড়ী গ্রামের শফিকুল ইসলাম ও ফারুক মিয়া, নখারপাড়া গ্রামের সুজন মিয়া ও বাদশা মিয়া, বাহাদুরপুর গ্রামের আবুল কাশেম ও লাভলু মিয়া, রায়পুর গ্রামের আব্দুল জলিল মিয়া, মদনখালি ইউনিয়নের জাফরপাড়া গ্রামের রুহুল আমিন ও মন্টু মিয়া, খেতাবেরপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলাম সূর্যমুখী চাষকৃত কৃষকরা বাসসকে জানান, নিজেরা সর্বনি¤œ ২৫শতক থেকে সর্বোচ্চ ১ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফসল চাষ করেছেন।

সূর্যমূখী ফসল চাষে ভাল মুনাফার সম্ভাবনা দেখছেন তারা। রংপুর জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সরওয়ারুল হক বাসসকে জানান, সূর্যমুখী একটি উচ্চমূল্যের বাণিজ্যিক তেলজাতীয় ফসল, বিধায় কৃষিকে বাণিজ্যিকভাবে লাভবান ও শস্য বৈচিত্রকরণ বৃদ্ধিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রংপুর জেলা উক্ত ফসল চাষাবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করে যাচ্ছে।


রংপুর অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ আলী বাসসকে জানান, সরকার প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ ভোজ্যতেল আমদানী করে থাকে। বর্তমানে দেশে চাষাপযোগী সূর্যমুখী ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে উৎকৃষ্টমানের ভোজ্যতেল উৎপাদনের সুযোগ তৈরী হয়েছে। ফলে, দেশের প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।


স্থানীয় এমপি স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বাসসকে জানান, কৃষি প্রনোদণার আওতায় এই বছর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের ৪ হাজার ৮২০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে ভুট্টা, সুর্যমুখী, গম, সরিষা, মুগ ও পেঁয়াজের বীজ এবং প্রয়োজনীয় রাসায়নিক সার বিনামুল্যে বিতরণ করা হয়েছে। এর ফলে পীরগঞ্জে পানি সাশ্রয়ী ফসল চাষে সম্প্রসারণ হবে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, এতে একদিকে যেমন পানি সাশ্রয়ী পরিবেশ বান্ধব ফসলের চাষ বৃদ্ধি পাবে অন্যদিকে, ওই সব ফসল বাজারজাতে কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে