দেশ ছাড়লেন ইরানের একমাত্র অলিম্পিক মেডেল জয়ী নারী

0
300

ইরানের অলিম্পিক মেডেল জয়ী একমাত্র নারী অ্যাথলিট কিমিয়া আলীজাদেহ দেশ ছেড়েছেন৷ ইরানের রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ‘ভণ্ড’ আখ্যা দিয়ে সে দেশে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অ্যাথলিটদের ব্যবহার করা হয় বলেও অভিযোগ তুলেছেন তিনি৷

ইরানের ছোঁড়া মিসাইলে ইউক্রেনের বিমান ভূপাতনে ১৭৬ জন আরোহীর সবাই মারা গেছেন৷ এ ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে আলীজাদেহ লেখেন, ‘‘আমি কী স্বাগত জানাবো, বিদায় বলবো, নাকি শোক প্রকাশ করবো?”

২০১৬ সালের রিও অলিম্পিকে তায়েকোয়ান্দোতে আলীজাদেহ ব্রোঞ্জ পদক জেতেন৷ সেসময় প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি তো বটেই, দেশটির অপেক্ষাকৃত রক্ষণশীল অংশের পক্ষ থেকেও প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তিনি৷

কিন্তু সম্প্রতি ইসলামিক রিপাবলিকটির নানা নিপীড়ন নিয়ে আলীজাদেহ সোচ্চার হয়েছেন৷ ইরানের রাজনৈতিক ব্য়বস্থাকে ‘ভণ্ড’, ‘মিথ্যাবাদী’, ‘বিচারহীন‘ এবং ‘তোষণমূলক‘ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি কেবল তায়েকোয়ান্দো, নিরাপত্তা এবং সুখী জীবন চেয়েছিলাম৷ ইরানের লক্ষ লক্ষ নারীর একজন আমি, যাদের নিয়ে তারা বছরের পর বছর ধরে খেলা করছে৷”

পর্দাপ্রথার দিকে ইঙ্গিত করে ২১ বছর বয়সি এ নারী বলেন, ‘‘তারা যা পরতে বলেছে, আমি তাই পরেছি৷ তারা যা করতে বলেছে, তাই করেছি৷ কিন্তু আমাদের চাওয়ার কোনো দাম ছিল না তাদের কাছে৷”যুক্তরাষ্ট্র: বন্ধু থেকে শত্রু : ১৯৫৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় মোসাদ্দেক সরকার উৎখাত হওয়ার পর ইরানের ক্ষমতায় আসেন রেজা শাহ পাহলভি৷ পরর্বতী ২৬ বছর ইরান-যুক্তরাষ্ট্র ছিল একে অপরের বন্ধু৷ ১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবে শাহ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এই সম্পর্ক শত্রুতায় রূপ নেয়৷ ১৯৮০ সাল থেকে দুই দেশের মধ্যে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই৷ একে অপরকে তারা সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবেও অ্যাখ্যায়িত করেছে৷

 

ইউরোপে তাকে কেউ আমন্ত্রণ জানায়নি বলে দাবি করেন আলীজাদেহ৷ কোন দেশে তিনি আছেন, সে বিষয়েও বলেননি কিছু৷ কিন্তু তিনি নেদারল্যান্ডসে আশ্রয় নিয়েছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে৷

বৃহস্পতিবার আলীজাদেহর নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ প্রথম প্রকাশ্যে আসে৷ দেশটির আইএসএনএ সংবাদ সংস্থা শিরোনাম করে, ‘‘ইরানের তায়েকোয়ান্দোর জন্য ধাক্কা৷ কিমিয়া আলীজাদেহ নেদারল্যান্ডসে পাড়ি জমিয়েছেন৷” এরপরই এ নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা৷ ইরানের সংসদ সদস্য আবদুলকারিম হোসেইনজাদেহ দেশের ‘সম্পদ’-এর এভাবে ‘পালিয়ে যাওয়া’ আটকাতে ব্যর্থ হওয়ায় ‘অযোগ্য কর্মকর্তাদের’ দায়ী করেন৷

আলীজাদেহ তার পরবর্তী কর্মপরিকল্পনার কথা না জানালোও ‘প্রিয় ইরানি জনগণকে’ উদ্দেশ্য করে বলেছেন, তিনি যেখানেই থাকুন ‘ইরানের সন্তান’ হিসেবেই থাকবেন৷

আবারও আলীজাদেহর মাধ্যমে ইরান টোকিও অলিম্পিকে পদক পাওয়ার আশা করছিল৷ বিভিন্ন সূত্রের কথা উল্লেখ করে ইরানের গণমাধ্যম বলছে, আলীজাদেহ টোকিও অলিম্পিকে অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ঠিকই, তবে ইরানের পতাকা নিয়ে নয়৷

এর আগে মাত্র ১৪ বছর বয়সে গ্র্যান্ডমাস্টার হয়ে তাক লাগান ইরানের বিস্ময় বালক আলীরেজা ফিরোজা৷পরবর্তীতে তিনি ফ্রান্সে পাড়ি জমান৷ সূত্র : ডয়েচে ভেলে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে