আজ থেকে ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে

0
381
ফাইল ছবি

বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০১৯, (নোঙরনিউজ) : আজ থেকে আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এ সময়ে ইলিশের আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময়নিষিদ্ধ থাকবে। এ আইন অমান্য করলে জেল অথবা জরিমানা এমনকি উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ সময়ে ৮০ শতাংশ মা ইলিশ ডিম ছাড়ে। একটি বড়ো ইলিশ ২৩ লাখ পর্যন্ত ডিম ছাড়তে পারে। আর এই ডিম পাড়ে মূলত মিঠা পানিতে। তাই আশ্বিনের পূর্ণিমার চার দিন আগে এবং পূর্ণিমার পর ১৮ দিন মোট ২২ দিন দেশের উপকূলীয় অঞ্চল, নদীর মোহনাসহ যেসব জেলা ও নদীতে ইলিশ পাওয়া যায়, সেখানে মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। তবে এ সময় যেসব জেলার জেলেরা মাছ ধরার ওপর নির্ভরশীল, তাদের খাদ্য সহযোগিতা দেওয়া হবে।

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি ও রামগতি সংবাদদাতা জানান, নিষেধাজ্ঞার সময় লক্ষ্মীপুরের রামগতি থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকায় মেঘনা নদীর ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত মাছ ধরা যাবে না। জেলা মত্স্য অফিস থেকে জানা গেছে, এ সময় সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে মা ইলিশ এসে লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় ডিম ছাড়ে। মা ইলিশ রক্ষা অভিযান সফল করতে লক্ষ্মীপুরে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া লিফলেট, পোস্টার ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে জেলেসহ সবার মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। বরফকলের বিদ্যুত্সংযোগ বিচ্ছিন্ন, অন্য কোথাও থেকে বরফ আসতে না দেওয়া, নদী সংলগ্ন খাল থেকে নৌকা বের হতে না দেওয়া, মাছঘাট সংলগ্ন বাজারের নৌকা ও ট্রলারের জ্বালানি তেলের দোকান বন্ধ রাখা, নদীর মধ্যে জেগে ওঠা চরের মাছঘাটগুলো বন্ধ রাখা হচ্ছে।

চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, উত্তরবঙ্গের ইলিশের প্রধান প্রজনন ক্ষেত্র সিরাজগঞ্জের কোথাও মা ইলিশ ধরতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহমেদ। তিনি বলেন, যারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করবেন তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হবে।

চৌহালী উপজেলা মত্স্যজীবী সমিতির সভাপতি রমজান আলী জানান, চৌহালীতে ১ হাজার ৪৫২ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৩৫৭ জন জেলেকে সরকারিভাবে চাল দেওয়া হবে। আর বাকিদের কোনো সাহায্য করা হবে না। এই জেলেরা কী করবে। নিষেধাজ্ঞার সময় কীভাবে চলবে তাদের সংসার।

চাঁদপুর প্রতিনিধি জানান, চাঁদপুর জেলা মত্স্য বিভাগ জানিয়েছে, সরকারঘোষিত ২২ দিনের এই অভয়াশ্রম কর্মসূচি বাস্তবায়নে জেলা টাস্কফোর্স তত্পর রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময়ে কোনো জেলে নদীতে নামতে পারবে না। আইন অমান্যকারীকে মত্স্য আইনে সাজা প্রদান করা হবে। টাস্কফোর্সের উদ্যোগে জেলেদের মাঝে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

দশমিনা (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা জানান, ইলিশ মাছের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে নদীতে ২৪ ঘণ্টা কোস্ট গার্ড ও নৌ-পুলিশের টিমের অভিযান চলবে। এছাড়া জেলেদের সচেতন করতে মাইকিং করা হয়েছে। মত্স্য আড়তগুলোকেও অবহিত করা হয়েছে। মা ইলিশ রক্ষায় প্রশাসন জিরো টলারেন্স দেখাবে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে