গণমানুষের কথা না ভেবে ভিআইপিদের পৃথক লেনের অবাস্তব চিন্তা

0
572

ঢাকা, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ (নোঙরনিউজ) : যানজটের কারণে বর্তমানে যে পরিমান সময় ব্যয় হচ্ছে, তা দিয়ে বিনা ভাড়ায় পৃথক লেনে জনগণকে পাবলিক বাসের সুবিধা দেয়া সম্ভব। জনগণের জন্য গণপরিবহনের সুবিধা বৃদ্ধি না করে ভিআইপিদের জন্য পৃথক লেনের প্রস্তাবনা একটি অবাস্তব এবং জনবিছিন্ন চিন্তা।

শনিবার,২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ সকাল ১১টায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন সভাকক্ষে আয়োজিত ‘পৃথক লেনে পাবলিক বাস-প্রস্তাবিত ভিআইপি লেনের প্রয়োজনীয়তা ও যৌক্তিকতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

পবা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে সংগঠনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, পবা’র সাধারণ সম্পাদক প্রকৌ. মো. আবদুস সেবাহান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. লেলিন চৌধুরী, সম্পাদক সৈয়দ মাহবুব আলম তাহিন, নাসফের সাধারণ সম্পাদক মো. তৈয়ব আলী, স্টাম্পফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. কামরুজ্জামান, পবা’র সহ-সম্পাদক স্থপতি শাহীন আজিজ, এম এ ওয়াহেদ, নোঙরের সভাপতি সুমন শামস, কবি কামরুজ্জামান ভূইঁয়া, বিডি ক্লিকের সভাপতি আমিনুল ইসলাম টুব্বুস, বানিপা’র সভাপতি প্রকৌ. মো: আনোয়ার হোসেন, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা তালুকদার বিফাত পাশা প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ঢাকার অধিকাংশ রাস্তায় পাবলিক পরিবহন চলাচল করতে দেয়া হয় না। সাধারণ মানুষের চলাচলের কথা বিবেচনা না করে ভিআইপি রোডের নাম শুধুমাত্র প্রাইভেট গাড়ি চলাচলের জন্য এ উদ্যোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার বিভিন্ন রাস্তায় শুধু রিকশা বন্ধ করা হয়। অনেক মানুষই চলাচলের জন্য বাধ্য হয় প্রাইভেট গাড়ি কিনতে। ঢাকায় প্রতিদিন নামছে ৩১৭টি প্রাইভেট কার। ধীরে ধীরে এ নগর আজ প্রাইভেট গাড়ির জটে পরিণত হয়েছে। আর এসব প্রকল্পের কারণে শহরে বেড়েছে যানজট এবং পরিবেশ দূষণ।

বক্তারা বলেন, গনপরিবহন চালুর আগে যাত্রীর যাতায়াত সম্পর্কে বাস্তবসম্মত তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হলে গণপরিবহন ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন সহজ হবে। বর্তমানে মোবাইল ফ্রিকোয়েন্সি বিশ্লেষণ করে বা মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে যাত্রীদের যাতায়াতের চাহিদা নিরূপণ করা সম্ভব। এ লক্ষ্যে মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে ঢাকার জনগণের কাছ থেকে তাদের প্রতিদিনের যাতায়াত স্থানের তথ্য সংগ্রহ করা যেতে পারে।

বক্তারা বলেন, বাসের জন্য পৃথক লেনের ক্ষেত্রে প্রথমে যেসব বিষয় নজর রাখা যেতে পারে, ঢাকার প্রধান সড়কগুলোতে প্রাথমিকভাবে স্থানান্তরযোগ্য ডিভাইডার অথবা রোড মার্কিং করে বাসের জন্য পৃথক লেন তৈরি; আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে পৃথক লেনে অন্য যানবাহন প্রবেশ না করতে নির্দেশনা প্রদান; শুধু অ্যাম্বুলেন্স, অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি এই লেন ব্যবহার করতে পারবে। বাসগুলোর চলাচল জিপিআরএসের মাধ্যমে নজরদারিতে রাখা জরুরি। সেই সাথে কোনো স্বার্থানেষী গোষ্ঠী বিআরটিসির বাস চালাচল যাতে ব্যাহত না হয়, তার জন্য গোয়েন্দা নজরদারির ব্যবস্থাও রাখা যেতে পারে।

বক্তারা বলেন, পাবলিক বাস সার্ভিসের মানোন্নয়নে দক্ষভাবে পাবলিক বাস পরিচালনার জন্য অভিভাবক সংস্থা রাখা ও কর্মরত সব সংস্থার মধ্যে সমন্বয় করা দরকার। বাসযাত্রীদের সেবা নিশ্চিত হচ্ছে কি-না সে বিষয়ে তদারকি ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার পাশাপাশি সরকার নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা প্রতিরোধ করতে হবে।

এ ছাড়া বাস স্টপেজের ডিজাইন করতে হবে এমনভাবে, যাতে নারী, শিশু, বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধীসহ সবাই ওঠানামা করতে পারে। গবেষণার ভিত্তিতে সঠিকভাবে বাস রুট ডিজাইন ও বরাদ্দ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে